ঢাকা ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বের সকল মানুষ যেন মহানবী (সা.)-এর শিক্ষা, আদর্শ ও ত্যাগে উজ্জীবিত হয়ে উঠে। নাগরপুরে কবরস্থানের সৌন্দর্য বর্ধনে ধুবড়িয়া ব্রাদার্সের দৃষ্টিনন্দন উদ্যোগ  আলোচনা গণতান্ত্রিক শাসন শক্তিশালী করার উপায় নিয়ে শাহরাস্তির আতঙ্ক জাবেদ বাহিনী, মসজিদের জায়গা জবর দখল, দালালী আর মামলাবাজিতে হাতিয়েছেন ২ হাজার কোটি টাকা : রয়েছেন ধরা ছোঁয়ার বাহিরে। ময়মনসিংহ রেঞ্জের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত  গাজীপুর জেলা শাখা অন্তর্গত “শ্রীপুর উপজেলা” শাখার কমিটির অনুমোদন।  বেকারত্ব নিরসনে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের ৭ দফা প্রস্তাবনা নোয়াখালীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মতবিনিময়  তবে উদ্যোগ রাজনৈতিক’ আমরা রাজনৈতিক দল নই তাহলে কি নিজেদের জালে-ই ফেঁসে গেলো ছাত্র সংঘটন!

ঈদ হোক সম্প্রীতির ও ভ্রাতৃত্বের

প্রতিনিধির নাম
  • নিউজ প্রকাশের সময় : ০৪:১১:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ এপ্রিল ২০২৩ ২২৫ বার পড়া হয়েছে

শেখ শাহাউর রহমান বেলাল:: দীর্ঘ এক মাসের সিয়াম সাধনার পর আনন্দের বার্তা নিয়ে এলো খুশির ঈদ। পবিত্র রমজানের শুরু থেকেই ঈদুল ফিতরের পবিত্র দিনটির জন্য বিশ্বজুড়ে অপেক্ষা করে ধর্মপ্রাণ সব মুসলমান। যে যার সাধ্যমতো এই দিনটি আনন্দঘন পরিবেশে উদ্যাপন করে থাকেন।

ঈদ মানে আনন্দ। সবার মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার মধ্যে রয়েছে অপার আনন্দ। ঈদের দিন ধনীগরিব নির্বিশেষে সবাই এক কাতারে শামিল হয়ে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। ঈদের আগের এক মাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আমরা আত্মাকে পরিশুদ্ধ করি। হিংসা, বিদ্বেষ, হানাহানি ভুলে মানুষে মানুষে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। ঈদের আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে পথের বিড়ম্বনা অগ্রাহ্য করে সবাই ছুটে যান স্বজনের কাছে।

ঈদ শব্দটির আরবি শব্দমূল আউদ। এর অর্থ যা ফিরে ফিরে বারবার আসে। ফিতর শব্দের অর্থ ভেঙে দেওয়া, ইফতার করা। ঈদুল ফিতর মানে সে আনন্দঘন উৎসব, যা দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর আসে। আসে সুশৃঙ্খল আচারআচরণের তীরঘেঁষে। নৈতিক, আত্মিক সামাজিক পরিশুদ্ধির সীমানা পেরিয়ে সামষ্টিক কল্যাণ নিয়ে ঈদ আসে।

ঈদুল ফিতর ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের দুটো সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের একটি। পবিত্র রমজান মাসে সিয়াম সাধনা সংযম পালনের পর শাওয়াল মাসের তারিখে সিয়াম ভঙ্গ করে স্বাভাবিক কর্মজীবনে ফিরে যাওয়ার আনন্দময় দিবসটি ঈদুল ফিতর নামে অভিহিত।

ধর্মীয় পরিভাষায় একে ইয়াউমুল জায়েজ অর্থাৎ পুরস্কারের দিবস হিসেবেও বর্ণনা করা হয়েছে। দীর্ঘ এক মাস রোজা রাখা বা সিয়াম সাধনার পর মুসলমানরা এই দিনটি ধর্মীয় কর্তব্য পালনসহ আনন্দের সঙ্গে পালন করে থাকে। শ্রেণিবৈষম্য বিবর্জিত, পঙ্কিলতা অশালীনতা মুক্ত সুনির্মল আনন্দে ভরা সুস্নিগ্ধ, প্রীতিসঘন মিলন উৎসব ঈদুল ফিতর।

ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের রমজান মাসের রোজার ভুলত্রুটি দূর করার জন্য ঈদের দিন অভাবী বা দুস্থদের কাছে অর্থ প্রদান করা হয়, যেটিকে ফিতরা বলা হয়ে থাকে। এটি প্রদান করা মুসলমানদের জন্য ওয়াজিব। আমাদের মধ্যে কেউ যখন মনের খায়েশ মেটাতে ব্যস্ত, তখন একমুঠো খাবার জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন কেউ কেউ। আমরা তাদের সারা বছরের বস্ত্রের সংকুলান হয়তো করতে পারব না, কিন্তু ঈদ উপলক্ষ করে সামর্থ্য অনুযায়ী অন্তত একজন অসহায় শিশুর পাশে দাঁড়াতে তো পারি। আমাদের নিকটাত্মীয়, প্রতিবেশীদের মধ্যেও থাকতে পারে এমন অসহায় সুবিধাবঞ্চিত শিশু মানুষ। তাদের কথাও ভেবে দেখতে হবে। আমাদের একটু সুদৃষ্টি অসংখ্য অসহায়ের মুখে হাসি ফোটাতে পারে। তাই মুসলমানদের জীবনে ঈদের তাৎপর্য অনেক। ঈদুল ফিতরের দিনে দানখয়রাতের মাধ্যমে পবিত্র ঈদের উৎসবকে আনন্দে উদ্ভাসিত করে তোলা। জাকাতফিতরার মাধ্যমে ধনী গরিবের মধ্যকার ভেদাভেদ দূরীভূত হয়। আর এতেই হয় মুসলিম হৃদয় উদ্বেলিত। ধনীগরিব, শিক্ষিতঅশিক্ষিত, সাদাকালো নির্বিশেষে একই কাতারে মিলিত হওয়া মানব সম্প্রীতির এক অনন্য নিদর্শন পবিত্র ঈদ। ঈদ আমাদের জন্য এক বিরাট নিয়ামত। কিন্তু আমরা দিনকে নিয়ামত হিসেবে গ্রহণ করি না। দিনে অনেক কাজ আছে; যার মাধ্যমে আমরা আল্লাহতায়ালার নিকটবর্তী হতে পারি এবং ঈদ উদযাপনও একটি ইবাদতে পরিণত হতে পারে। ধনসম্পদের প্রাচুর্যে অপচয়ে মত্ত হয় এক স্তরের মানুষ এই ঈদকে কেন্দ্র করে। আর পাশের বাড়ির মানুষটি না খেয়ে থাকলেও খবর রাখে না কেউ। তাই বিভেদ ভুলে ঈদ হোক সমতার। ঈদ হোক সম্প্রীতির ভ্রাতৃত্বের।

মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার শেষে শাওয়ালের বাঁকা চাঁদ নিয়ে আসে পরম আনন্দ খুশির ঈদ। রোজাদার যে পরিচ্ছন্নতার পবিত্রতার সৌকর্য দ্বারা অভিষিক্ত হন, যে আত্মশুদ্ধি, সংযম, ত্যাগতিতিক্ষা, উদারতা, বদান্যতা, মহানুভবতা মানবতার গুণাবলি দ্বারা উদ্ভাসিত হন, এর গতিধারার প্রবাহ অক্ষুন্ন রাখার শপথ গ্রহণের দিন হিসেবে ঈদুল ফিতর সমাগত হয়। এদিন যে আনন্দধারা প্রবাহিত হয়, তা অফুরন্ত পুণ্য দ্বারা পরিপূর্ণ। সারা বিশ্বের মুসলমানের সর্বজনীন আনন্দউৎসব ঈদুল ফিতর। বছরজুড়ে নানা প্রতিকূলতা, দুঃখবেদনা সব ভুলে ঈদের দিন মানুষ সবার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিলিত হন। ঈদগাহে কোলাকুলি, সৌহার্দ, সম্প্রীতি ভালোবাসার বন্ধনে সবাইকে নতুন করে আবদ্ধ করে। ঈদ এমন এক নির্মল আনন্দের আয়োজন, যেখানে মানুষ আত্মশুদ্ধির আনন্দে পরস্পরের মেলবন্ধনে ঐক্যবদ্ধ হন এবং আনন্দ সমভাগাভাগি করেন।

ঈদের দিন মসজিদে, ময়দানে ঈদের নামাজে বিপুলসংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসল্লির সমাগম হয়ে থাকে। সবাই সুশৃঙ্খলভাবে কাতারবদ্ধ হয়ে ঈদের নামাজ পড়েন। নামাজ শেষে ধনীনির্ধন, পরিচিতঅপরিচিত সবাই সানন্দে কোলাকুলি করেন। ঈদের নামাজ আদায় করতে যাওয়ার আগে একটি খেজুর কিংবা খোরমা অথবা মিষ্টান্ন খেয়ে রওনা হওয়া সওয়াবের কাজ। ঈদুল ফিতরের ব্যাপারে ইসলামী নির্দেশসমূহের মধ্যে রয়েছে গোসল করা, মিসওয়াক করা, আতরসুরমা লাগানো, এক রাস্তা দিয়ে ঈদের মাঠে গমন এবং নামাজ শেষে ভিন্ন পথে গৃহে প্রত্যাবর্তন। ছাড়া সর্বাগ্রে অজুগোসলের মাধ্যমে পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন হওয়ার বিধানও রয়েছে। ইসলামে নতুন পোশাক পরিধান করার বাধ্যবাধকতা না থাকলেও বিভিন্ন দেশে তা বহুল প্রচলিত একটি রীতিতে পরিণত হয়েছে।

মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে আমাদের কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা হলো, জগতের সব মানুষের সুখ, শান্তি সমৃদ্ধি। পৃথিবী সর্বপ্রকার হিংসাবিদ্বেষ হানাহানি মুক্ত হোক! সন্ত্রাসের বিভীষিকা দূর হোক! আন্তধর্মীয় সম্প্রীতি সৌহার্দের বন্ধন দৃঢ়তর হোক! আগামী দিনগুলো সুন্দর সৌন্দর্যমন্ডিত হোক! হাসিখুশি ঈদের আনন্দে ভরে উঠুক প্রতিটি প্রাণ, ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ রাষ্ট্রীয় জীবনে সংযম, সৌহার্দ সম্প্রীতির পরিবেশ পরিব্যাপ্তি লাভ করুকএটাই হোক ঈদ উৎসবের ঐকান্তিক কামনা। তাই আসুন, ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দিই সবার মনেপ্রাণে। বুকে বুক মিলিয়ে আসুন সবাই সবার হয়ে যাই। সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক! ঈদ মোবারক! ঈদ মোবারক!!

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

ঈদ হোক সম্প্রীতির ও ভ্রাতৃত্বের

নিউজ প্রকাশের সময় : ০৪:১১:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ এপ্রিল ২০২৩

শেখ শাহাউর রহমান বেলাল:: দীর্ঘ এক মাসের সিয়াম সাধনার পর আনন্দের বার্তা নিয়ে এলো খুশির ঈদ। পবিত্র রমজানের শুরু থেকেই ঈদুল ফিতরের পবিত্র দিনটির জন্য বিশ্বজুড়ে অপেক্ষা করে ধর্মপ্রাণ সব মুসলমান। যে যার সাধ্যমতো এই দিনটি আনন্দঘন পরিবেশে উদ্যাপন করে থাকেন।

ঈদ মানে আনন্দ। সবার মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার মধ্যে রয়েছে অপার আনন্দ। ঈদের দিন ধনীগরিব নির্বিশেষে সবাই এক কাতারে শামিল হয়ে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। ঈদের আগের এক মাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আমরা আত্মাকে পরিশুদ্ধ করি। হিংসা, বিদ্বেষ, হানাহানি ভুলে মানুষে মানুষে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। ঈদের আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে পথের বিড়ম্বনা অগ্রাহ্য করে সবাই ছুটে যান স্বজনের কাছে।

ঈদ শব্দটির আরবি শব্দমূল আউদ। এর অর্থ যা ফিরে ফিরে বারবার আসে। ফিতর শব্দের অর্থ ভেঙে দেওয়া, ইফতার করা। ঈদুল ফিতর মানে সে আনন্দঘন উৎসব, যা দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর আসে। আসে সুশৃঙ্খল আচারআচরণের তীরঘেঁষে। নৈতিক, আত্মিক সামাজিক পরিশুদ্ধির সীমানা পেরিয়ে সামষ্টিক কল্যাণ নিয়ে ঈদ আসে।

ঈদুল ফিতর ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের দুটো সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের একটি। পবিত্র রমজান মাসে সিয়াম সাধনা সংযম পালনের পর শাওয়াল মাসের তারিখে সিয়াম ভঙ্গ করে স্বাভাবিক কর্মজীবনে ফিরে যাওয়ার আনন্দময় দিবসটি ঈদুল ফিতর নামে অভিহিত।

ধর্মীয় পরিভাষায় একে ইয়াউমুল জায়েজ অর্থাৎ পুরস্কারের দিবস হিসেবেও বর্ণনা করা হয়েছে। দীর্ঘ এক মাস রোজা রাখা বা সিয়াম সাধনার পর মুসলমানরা এই দিনটি ধর্মীয় কর্তব্য পালনসহ আনন্দের সঙ্গে পালন করে থাকে। শ্রেণিবৈষম্য বিবর্জিত, পঙ্কিলতা অশালীনতা মুক্ত সুনির্মল আনন্দে ভরা সুস্নিগ্ধ, প্রীতিসঘন মিলন উৎসব ঈদুল ফিতর।

ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের রমজান মাসের রোজার ভুলত্রুটি দূর করার জন্য ঈদের দিন অভাবী বা দুস্থদের কাছে অর্থ প্রদান করা হয়, যেটিকে ফিতরা বলা হয়ে থাকে। এটি প্রদান করা মুসলমানদের জন্য ওয়াজিব। আমাদের মধ্যে কেউ যখন মনের খায়েশ মেটাতে ব্যস্ত, তখন একমুঠো খাবার জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন কেউ কেউ। আমরা তাদের সারা বছরের বস্ত্রের সংকুলান হয়তো করতে পারব না, কিন্তু ঈদ উপলক্ষ করে সামর্থ্য অনুযায়ী অন্তত একজন অসহায় শিশুর পাশে দাঁড়াতে তো পারি। আমাদের নিকটাত্মীয়, প্রতিবেশীদের মধ্যেও থাকতে পারে এমন অসহায় সুবিধাবঞ্চিত শিশু মানুষ। তাদের কথাও ভেবে দেখতে হবে। আমাদের একটু সুদৃষ্টি অসংখ্য অসহায়ের মুখে হাসি ফোটাতে পারে। তাই মুসলমানদের জীবনে ঈদের তাৎপর্য অনেক। ঈদুল ফিতরের দিনে দানখয়রাতের মাধ্যমে পবিত্র ঈদের উৎসবকে আনন্দে উদ্ভাসিত করে তোলা। জাকাতফিতরার মাধ্যমে ধনী গরিবের মধ্যকার ভেদাভেদ দূরীভূত হয়। আর এতেই হয় মুসলিম হৃদয় উদ্বেলিত। ধনীগরিব, শিক্ষিতঅশিক্ষিত, সাদাকালো নির্বিশেষে একই কাতারে মিলিত হওয়া মানব সম্প্রীতির এক অনন্য নিদর্শন পবিত্র ঈদ। ঈদ আমাদের জন্য এক বিরাট নিয়ামত। কিন্তু আমরা দিনকে নিয়ামত হিসেবে গ্রহণ করি না। দিনে অনেক কাজ আছে; যার মাধ্যমে আমরা আল্লাহতায়ালার নিকটবর্তী হতে পারি এবং ঈদ উদযাপনও একটি ইবাদতে পরিণত হতে পারে। ধনসম্পদের প্রাচুর্যে অপচয়ে মত্ত হয় এক স্তরের মানুষ এই ঈদকে কেন্দ্র করে। আর পাশের বাড়ির মানুষটি না খেয়ে থাকলেও খবর রাখে না কেউ। তাই বিভেদ ভুলে ঈদ হোক সমতার। ঈদ হোক সম্প্রীতির ভ্রাতৃত্বের।

মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার শেষে শাওয়ালের বাঁকা চাঁদ নিয়ে আসে পরম আনন্দ খুশির ঈদ। রোজাদার যে পরিচ্ছন্নতার পবিত্রতার সৌকর্য দ্বারা অভিষিক্ত হন, যে আত্মশুদ্ধি, সংযম, ত্যাগতিতিক্ষা, উদারতা, বদান্যতা, মহানুভবতা মানবতার গুণাবলি দ্বারা উদ্ভাসিত হন, এর গতিধারার প্রবাহ অক্ষুন্ন রাখার শপথ গ্রহণের দিন হিসেবে ঈদুল ফিতর সমাগত হয়। এদিন যে আনন্দধারা প্রবাহিত হয়, তা অফুরন্ত পুণ্য দ্বারা পরিপূর্ণ। সারা বিশ্বের মুসলমানের সর্বজনীন আনন্দউৎসব ঈদুল ফিতর। বছরজুড়ে নানা প্রতিকূলতা, দুঃখবেদনা সব ভুলে ঈদের দিন মানুষ সবার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিলিত হন। ঈদগাহে কোলাকুলি, সৌহার্দ, সম্প্রীতি ভালোবাসার বন্ধনে সবাইকে নতুন করে আবদ্ধ করে। ঈদ এমন এক নির্মল আনন্দের আয়োজন, যেখানে মানুষ আত্মশুদ্ধির আনন্দে পরস্পরের মেলবন্ধনে ঐক্যবদ্ধ হন এবং আনন্দ সমভাগাভাগি করেন।

ঈদের দিন মসজিদে, ময়দানে ঈদের নামাজে বিপুলসংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসল্লির সমাগম হয়ে থাকে। সবাই সুশৃঙ্খলভাবে কাতারবদ্ধ হয়ে ঈদের নামাজ পড়েন। নামাজ শেষে ধনীনির্ধন, পরিচিতঅপরিচিত সবাই সানন্দে কোলাকুলি করেন। ঈদের নামাজ আদায় করতে যাওয়ার আগে একটি খেজুর কিংবা খোরমা অথবা মিষ্টান্ন খেয়ে রওনা হওয়া সওয়াবের কাজ। ঈদুল ফিতরের ব্যাপারে ইসলামী নির্দেশসমূহের মধ্যে রয়েছে গোসল করা, মিসওয়াক করা, আতরসুরমা লাগানো, এক রাস্তা দিয়ে ঈদের মাঠে গমন এবং নামাজ শেষে ভিন্ন পথে গৃহে প্রত্যাবর্তন। ছাড়া সর্বাগ্রে অজুগোসলের মাধ্যমে পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন হওয়ার বিধানও রয়েছে। ইসলামে নতুন পোশাক পরিধান করার বাধ্যবাধকতা না থাকলেও বিভিন্ন দেশে তা বহুল প্রচলিত একটি রীতিতে পরিণত হয়েছে।

মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে আমাদের কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা হলো, জগতের সব মানুষের সুখ, শান্তি সমৃদ্ধি। পৃথিবী সর্বপ্রকার হিংসাবিদ্বেষ হানাহানি মুক্ত হোক! সন্ত্রাসের বিভীষিকা দূর হোক! আন্তধর্মীয় সম্প্রীতি সৌহার্দের বন্ধন দৃঢ়তর হোক! আগামী দিনগুলো সুন্দর সৌন্দর্যমন্ডিত হোক! হাসিখুশি ঈদের আনন্দে ভরে উঠুক প্রতিটি প্রাণ, ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ রাষ্ট্রীয় জীবনে সংযম, সৌহার্দ সম্প্রীতির পরিবেশ পরিব্যাপ্তি লাভ করুকএটাই হোক ঈদ উৎসবের ঐকান্তিক কামনা। তাই আসুন, ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দিই সবার মনেপ্রাণে। বুকে বুক মিলিয়ে আসুন সবাই সবার হয়ে যাই। সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক! ঈদ মোবারক! ঈদ মোবারক!!