গাজিপুরে জাহাঙ্গীরের উত্থান “এলাম আর গেলাম“
- নিউজ প্রকাশের সময় : ০৭:৪০:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৩ ৮৯ বার পড়া হয়েছে
আওয়ামী লীগ পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তাদের প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে। চূড়ান্ত মনোনয়নে দেখা যাচ্ছে, গতবার সিটি করপোরেশনে যাদেরকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল, তাদের মধ্যে দুইজন মনোনয়ন পাননি। এদের মধ্যে বরিশালের সাদেক আব্দুল্লাহ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। আর অন্যদিকে গাজীপুরের মেয়র পদ থেকে বহিষ্কৃত জাহাঙ্গীর মনোনয়ন পাননি। জাহাঙ্গীরসহ ১৭ জন মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ বেছে নিয়েছে আজমত উল্লাকে।
জাহাঙ্গীর এলাকায় অনেক জনপ্রিয় এবং তার উত্থান অনেকটা ‘এলাম, দেখলাম, জয় করলাম’র মতো। তিনি আওয়ামী লীগের একজন মধ্য স্তরের কর্মী থেকেই হঠাৎ করে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন এবং তার পর তিনি মনোনয়ন পেয়েও চমক দেখান। গাজীপুরে তার একটি নিজস্ব বাহিনী রয়েছে বলে স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছেন। এবং এ সমস্ত বাহিনীর কারণে গাজীপুরে এক রকম নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জাহাঙ্গীর। এ কারণেই গত নির্বাচনে আজমত উল্লার মতো প্রার্থীকে বাদ দিয়ে জাহাঙ্গীরকে প্রার্থী করেছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু প্রার্থী হওয়ার পর জাহাঙ্গীর বেপরোয়া হয়ে ওঠছিলেন। আওয়ামী লীগের বাইরে গিয়ে একটি জাহাঙ্গীর লীগ গঠন করেছিলেন। তাছাড়া এ সময়ে দলের নেতাদের সম্বন্ধে ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথাবার্তা এবং জাতির পিতা সম্পর্কে অসন্মানজনক কথার কারণেই তাকে শেষ পর্যন্ত দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে মেয়র পদ থেকেও তাকে সরে যেতে হয়েছিল।
আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠরা মনে করেন, জাহাঙ্গীর কখনোই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়, বরং আওয়ামী লীগকে সে পদ-পদবীর জন্যই ব্যবহার করেছে। আওয়ামী লীগের ঘাড়ে সাওয়ার হয়ে মেয়র হওয়াটাই ছিল তার মূল লক্ষ্য। রাজনৈতিক আদর্শ বলে তার কোনো কিছু নেই। এবার মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার পর জাহাঙ্গীরের সমর্থক এবং অনুসারীরা আবার নতুন করে সক্রিয় হয়েছে। তারা জাহাঙ্গীরকে প্ররোচনা দিচ্ছে যে, সে যেন নির্বাচন করে। গাজীপুরে জাহাঙ্গীরপন্থীদের একটি বড় অংশের ধারণা, আজমত উল্লার সঙ্গে স্বতন্ত্র নির্বাচন করে জাহাঙ্গীরের জয়ের সম্ভাবনা বেশি এবং এর ফলে নির্বাচনে উত্তেজনাও তৈরি হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে জাহাঙ্গীর যদি আবার স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করে, সেটি আওয়ামী লীগ কিভাবে নেবে সেটিও একটি বিবেচ্য বিষয়।
তবে জাহাঙ্গীরের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, আওয়ামী লীগের কাছ থেকে তাদের চাওয়া-পাওয়ার কিছ নেই। জাহাঙ্গীর গণমাধ্যমকে বলেছেন, যদি জনগণ চায়, তাহলে তিনি নির্বাচন করবেন। আর জাহাঙ্গীর যদি নির্বাচন করে, তাহলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জন্য গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। অবশ্য জাহাঙ্গীরকে নির্বাচনে দাঁড় করানোর পেছনে আওয়ামী লীগেরও একটি অংশের উস্কানি রয়েছে। সারাদেশে আওয়ামী লীগের যে বিভক্তি কোন্দল, তারই একটি বহিঃপ্রকাশ ঘটতে পারে যদি জাহাঙ্গীর এবং আজমত উল্লা নির্বাচনে প্রার্থী হন। আর এটি হবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আওয়ামী লীগের লড়াইয়ের একটি চূড়ান্ত দিক। সুত্র: বাংলা ইনসাইডার