নাগরপুরে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালনে পাঁচ সংগঠনের বর্ণাঢ্য র্যালি ও কর্মসূচি

- নিউজ প্রকাশের সময় : ০২:২৩:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫ ২৪ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস ২০২৫ উপলক্ষে টাঙ্গাইলের নাগরপুরে নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করেছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। এবার চোখে পড়ার মতো বিষয় ছিল—একই উদ্দেশ্যে পাঁচটি সংগঠনের পৃথক কর্মসূচি, যা স্থানীয় শ্রমিক সমাজে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।সকাল থেকেই উৎসবমুখর পরিবেশে বিভিন্ন সংগঠন তাদের নিজস্ব ব্যানারে র্যালি, আলোচনা সভা এবং দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। এতে অংশগ্রহণকারী শ্রমিকদের মধ্যে ছিল উচ্ছ্বাস, সচেতনতা এবং নিজেদের অধিকার নিয়ে ভাবনার ছাপ।১ মে—শ্রমিকের রক্তে লেখা অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন। ১৮৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের “হে মার্কেট” ট্র্যাজেডির মধ্য দিয়ে সূচনা হয় শ্রমিকদের আট ঘণ্টা কর্মদিবসের দাবির আন্দোলনের। বহু শ্রমিক প্রাণ হারান, কিন্তু এই আত্মত্যাগ বিশ্বজুড়ে শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠার পথ খুলে দেয়। সেই থেকে প্রতি বছর ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে পালিত হয়।বাংলাদেশে শ্রম আইন প্রথম কার্যকর হয় ব্রিটিশ আমলে, পরে পাকিস্তান আমলে কিছু সংশোধন হয়। তবে বর্তমানে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩ ও ২০১৮) মূল ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই আইনে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।রিকশা ও ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের আয়োজন“শ্রমিক মালিক ভাই ভাই, একতাই শক্তি, একতাই মুক্তি” — এই স্লোগানে দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করে নাগরপুর রিকশা ও ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন। বর্ণাঢ্য র্যালিতে অংশগ্রহণ করে শতাধিক শ্রমিক, মাথায় লাল ফিতা বেঁধে তারা প্রদর্শন করে শ্রমিক ঐক্যের প্রতীকী বার্তা। সংগঠনের নেতারা শ্রমিকদের বীমা, আইনি সহায়তা ও সামাজিক নিরাপত্তার দাবি জানান।ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ র্যালিইসলামী শ্রমিক আন্দোলন, নাগরপুর উপজেলা শাখা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে আয়োজন করে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলসহ একটি সুসজ্জিত র্যালির। ব্যানারে লেখা ছিল—”এক হক এক মত”, “দুনিয়ার মজদুর এক হউক”। তারা শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি ও ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়নের দাবি তুলে ধরেন। বক্তারা বলেন, শ্রমিকের পরিশ্রমের যথাযথ মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ছাড়া কোনো সভ্য সমাজ সম্ভব নয়।শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ব্যতিক্রমী আয়োজনবাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন, নাগরপুর উপজেলা শাখা আয়োজিত কর্মসূচিতে ছিল ধর্মীয় বক্তব্য ও শ্রমিক অধিকারবিষয়ক আলোচনা। “আমি কেয়ামতের দিন তার বিরুদ্ধে মামলা করব, যে শ্রমিকের পূর্ণ মজুরি দেয় না” — রাসুল (সা.)-এর এই হাদিসকে সামনে রেখে তারা শ্রমিক শোষণ বন্ধে নৈতিক দিকনির্দেশনা তুলে ধরেন।স্থানীয়দের মতামতএকাধিক সংগঠনের পৃথক পৃথক আয়োজন স্থানীয়ভাবে বহুমাত্রিক চিত্র উপস্থাপন করলেও কেউ কেউ মনে করেন, একত্রে সম্মিলিতভাবে এমন আয়োজন হলে শ্রমিকদের মধ্যে ঐক্যের বার্তা আরও জোরালোভাবে পৌঁছাতো।নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরাফাত মোহাম্মদ নোমান বলেন, “শ্রমিক দিবসে ভিন্ন ভিন্ন সংগঠনের অংশগ্রহণ প্রশংসনীয়। ভবিষ্যতে আমরা চাই একটি সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম তৈরি হোক, যেখানে সব শ্রমিক এক কণ্ঠে তাদের অধিকার তুলে ধরতে পারেন।”