ঢাকা ১০:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
জেলা বিএনপি আহবায়ক এড.মান্নানের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়। অর্ধাহারে-অনাহারে ১৪শ চা শ্রমিক তিন মাস ধরে বন্ধ মজুরি নতুন ভিসি ওমর ফারুক চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের  চাঁদায় নদী ভাঙন রোধের চেষ্টা কুড়িগ্রামে গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রম- নাগরপুরে ডিমের দাম বৃদ্ধি , ক্রেতাদের মাঝে অস্বস্থির ক্ষোভ  নোয়াখালীতে ফকির চাড়ুমিজি মাজারে চলছে লক্ষ লক্ষ টাকার রমরমা বাণিজ্য শেরপুরে ছাত্র অধিকার পরিষদের জনসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ  শ্রমিকদের সংঘর্ষ, নিহত ১ আশুলিয়ায় দুই পোশাক কারখানার  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস পুনর্গঠনের লক্ষ্যে ১২ দফা  বিশ্বের সকল মানুষ যেন মহানবী (সা.)-এর শিক্ষা, আদর্শ ও ত্যাগে উজ্জীবিত হয়ে উঠে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

এম কে খোকন ব্রাহ্মণবাড়িয়া ব্যুরো চীফ
  • নিউজ প্রকাশের সময় : ০৬:২৩:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪ ১৭ বার পড়া হয়েছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সীমান্ত এলাকায় ভাড়ি বর্ষণ ও ভারতের পাহাড়ীর ঢলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা পানি কমতে শুরু করলেও শঙ্কা কাটেনি। আখাউড়ায় গঙ্গাসাগর পয়েন্টে হাওড়া নদীর পানি ৯ সেন্টিমিটার কমে ৫ দশমিক ৭০ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, তবে বাড়ছে তিতাস ও মেঘনার পানি।ফলে এই সীমান্ত এলাকার রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া ও কসবা এবং বিজয়নগর সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ভারতের পাহাড়ি ঢলের পানি তীব্র বেগে আসে। মূলত উপজেলার হাওড়া নদীর ও আগরতলা সংযুক্ত আখাউড়া ইমিগ্রেশনের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া জাজিরা, কাটা ও কালন্দি খাল দিয়ে ভারত থেকে পানি ঢুকছে। অপর দিকে কসবার সীমান্ত এলাকা দিয়ে পানি তীব্র স্রোতের প্লাবিত হওয়ার কারনে মানুষের বাড়িঘর , রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। পুকুরের মাছের ঘের ও বীজতলাসহ শাকসবজির জমি ডুবে গেছে।এতে করে এলাকারগুলোতে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় লোকজন বলেন, আগরতলার বৃষ্টির সঙ্গে আখাউড়ার বন্যার পরিস্থিতি নির্ভর করে। গতকাল থেকে আজ সকাল নয়টা পর্যন্ত আগরতলা ও আখাউড়ায় কোনো বৃষ্টি হয়নি। তবে আখাউড়া ও আগরতলার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে আছে। বৃষ্টি হলে পানি বাড়বে ও বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হবে। কসবা উপজেলা  নয়নপুর ভায়া মাদলা, খাদলা, পুটিয়া,শ্যামপুরের রাস্তা পুরোপুরি  পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সালদানদীর  পানি প্রবাহের সর্বোচ্চ স্তরে পৌছেছে। বায়েক ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটা গ্রাম-ই পানির নিচে তলিয়ে গেছে। শত শত মাছের ঘেড়  ফসলি জমি  বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। সবার সাহায্যে দ্রুত এগিয়ে আসার আহবান জানান। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ভারী বৃষ্টি ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হাওড়া নদীর বাঁধের দুটি অংশসহ সড়কের ৮টি স্থান ভেঙে গেছে। এতে উজানের পানিতে আখাউড়া ও কসবা উপজেলার ৭ ইউনিয়নের ৩৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী আছে পাঁচ হাজার মানুষ। লোকজন প্লাবিত বসতঘর ছেড়ে উজান, স্বজনদের বাড়িঘরসহ উপজেলার ১১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে আনুমানিক ৩০০ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। আখাউড়ার ১৫টি সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। পাহাড়ী আকস্মিক বন্যায় রাস্তাঘাট,বাড়িঘর, ফসল ও মাছ চাষসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি পানি বাহিত নানা রোগ বিস্তার ঘাটার সম্ভাবনা আছে। এদিকে জেলা প্রশাসন পক্ষ হতে বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরন ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন। পর্যাপ্ত সহায়তার ব্যবস্থা আছে বলে প্রশাসনের পক্ষ হতে জানানো হয়েছে। এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ ও সেনাবাহিনী এবং স্বেচ্ছাসেবি সংগঠনগুলো উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে বন্যার্ত মানুষের মানবিক সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসছেন। এদিকে দিনভর আখাউড়ার বন্যার্ত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন গণঅধিকার পরিষদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পক্ষ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার ৩ টি গ্রামে প্রায় ২৫০ টি  বন্যার্ত পরিবারের মধ্যে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সেক্রেটারি জনাব মুহা.মোবারক হোসাইন, জেলা প্রচার সম্পাদক কাজী সিরাজুল ইসলাম, আখাউড়া উপজেলার আমির ইকবাল হোসেন এবং ছাত্রশিবিরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার জেলা সেক্রেটারি হাসান মাহমুদ, আখাউড়া উপজেলার সভাপতি শেখ সিফাতুল্লাহসহ নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বে আখাউড়া উপজেলার মুগরা ইউনিয়ন খলাপাড়া এবং আখাউড়া চেকপোস্ট এলাকায় ত্রাণ  বিতরণ করেন। এ সময় নেতৃবৃন্দরা সমাজের সামর্থবান মানুষকে বন্যার্তদের ত্রাণ সহায়তায় এগিয়ে আসার আহবান জানান। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনজুর রহমান বলেন, আখাউড়ার গঙ্গাসাগর পয়েন্টে হাওড়া নদীর বিপৎসীমা ৬ দশমিক শূন্য ৫ মিটার। গতকাল রাতে এখানে পানি ৫ দশমিক ৭৯ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হয়। আজ শুক্রবার সকাল নয়টায় পানি ৯ সেন্টিমিটার কমে ৫ দশমিক ৭০ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। যা বিপৎসীমা থেকে ৩৫ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। তবে সালদা ও তিতাসসহ মেঘনা নদীর পানি বাড়ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

নিউজ প্রকাশের সময় : ০৬:২৩:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সীমান্ত এলাকায় ভাড়ি বর্ষণ ও ভারতের পাহাড়ীর ঢলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা পানি কমতে শুরু করলেও শঙ্কা কাটেনি। আখাউড়ায় গঙ্গাসাগর পয়েন্টে হাওড়া নদীর পানি ৯ সেন্টিমিটার কমে ৫ দশমিক ৭০ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, তবে বাড়ছে তিতাস ও মেঘনার পানি।ফলে এই সীমান্ত এলাকার রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া ও কসবা এবং বিজয়নগর সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ভারতের পাহাড়ি ঢলের পানি তীব্র বেগে আসে। মূলত উপজেলার হাওড়া নদীর ও আগরতলা সংযুক্ত আখাউড়া ইমিগ্রেশনের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া জাজিরা, কাটা ও কালন্দি খাল দিয়ে ভারত থেকে পানি ঢুকছে। অপর দিকে কসবার সীমান্ত এলাকা দিয়ে পানি তীব্র স্রোতের প্লাবিত হওয়ার কারনে মানুষের বাড়িঘর , রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। পুকুরের মাছের ঘের ও বীজতলাসহ শাকসবজির জমি ডুবে গেছে।এতে করে এলাকারগুলোতে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় লোকজন বলেন, আগরতলার বৃষ্টির সঙ্গে আখাউড়ার বন্যার পরিস্থিতি নির্ভর করে। গতকাল থেকে আজ সকাল নয়টা পর্যন্ত আগরতলা ও আখাউড়ায় কোনো বৃষ্টি হয়নি। তবে আখাউড়া ও আগরতলার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে আছে। বৃষ্টি হলে পানি বাড়বে ও বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হবে। কসবা উপজেলা  নয়নপুর ভায়া মাদলা, খাদলা, পুটিয়া,শ্যামপুরের রাস্তা পুরোপুরি  পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সালদানদীর  পানি প্রবাহের সর্বোচ্চ স্তরে পৌছেছে। বায়েক ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটা গ্রাম-ই পানির নিচে তলিয়ে গেছে। শত শত মাছের ঘেড়  ফসলি জমি  বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। সবার সাহায্যে দ্রুত এগিয়ে আসার আহবান জানান। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ভারী বৃষ্টি ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হাওড়া নদীর বাঁধের দুটি অংশসহ সড়কের ৮টি স্থান ভেঙে গেছে। এতে উজানের পানিতে আখাউড়া ও কসবা উপজেলার ৭ ইউনিয়নের ৩৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী আছে পাঁচ হাজার মানুষ। লোকজন প্লাবিত বসতঘর ছেড়ে উজান, স্বজনদের বাড়িঘরসহ উপজেলার ১১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে আনুমানিক ৩০০ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। আখাউড়ার ১৫টি সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। পাহাড়ী আকস্মিক বন্যায় রাস্তাঘাট,বাড়িঘর, ফসল ও মাছ চাষসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি পানি বাহিত নানা রোগ বিস্তার ঘাটার সম্ভাবনা আছে। এদিকে জেলা প্রশাসন পক্ষ হতে বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরন ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন। পর্যাপ্ত সহায়তার ব্যবস্থা আছে বলে প্রশাসনের পক্ষ হতে জানানো হয়েছে। এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ ও সেনাবাহিনী এবং স্বেচ্ছাসেবি সংগঠনগুলো উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে বন্যার্ত মানুষের মানবিক সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসছেন। এদিকে দিনভর আখাউড়ার বন্যার্ত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন গণঅধিকার পরিষদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পক্ষ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার ৩ টি গ্রামে প্রায় ২৫০ টি  বন্যার্ত পরিবারের মধ্যে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সেক্রেটারি জনাব মুহা.মোবারক হোসাইন, জেলা প্রচার সম্পাদক কাজী সিরাজুল ইসলাম, আখাউড়া উপজেলার আমির ইকবাল হোসেন এবং ছাত্রশিবিরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার জেলা সেক্রেটারি হাসান মাহমুদ, আখাউড়া উপজেলার সভাপতি শেখ সিফাতুল্লাহসহ নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বে আখাউড়া উপজেলার মুগরা ইউনিয়ন খলাপাড়া এবং আখাউড়া চেকপোস্ট এলাকায় ত্রাণ  বিতরণ করেন। এ সময় নেতৃবৃন্দরা সমাজের সামর্থবান মানুষকে বন্যার্তদের ত্রাণ সহায়তায় এগিয়ে আসার আহবান জানান। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনজুর রহমান বলেন, আখাউড়ার গঙ্গাসাগর পয়েন্টে হাওড়া নদীর বিপৎসীমা ৬ দশমিক শূন্য ৫ মিটার। গতকাল রাতে এখানে পানি ৫ দশমিক ৭৯ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হয়। আজ শুক্রবার সকাল নয়টায় পানি ৯ সেন্টিমিটার কমে ৫ দশমিক ৭০ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। যা বিপৎসীমা থেকে ৩৫ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। তবে সালদা ও তিতাসসহ মেঘনা নদীর পানি বাড়ছে।