ঢাকা ১২:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বের সকল মানুষ যেন মহানবী (সা.)-এর শিক্ষা, আদর্শ ও ত্যাগে উজ্জীবিত হয়ে উঠে। নাগরপুরে কবরস্থানের সৌন্দর্য বর্ধনে ধুবড়িয়া ব্রাদার্সের দৃষ্টিনন্দন উদ্যোগ  আলোচনা গণতান্ত্রিক শাসন শক্তিশালী করার উপায় নিয়ে শাহরাস্তির আতঙ্ক জাবেদ বাহিনী, মসজিদের জায়গা জবর দখল, দালালী আর মামলাবাজিতে হাতিয়েছেন ২ হাজার কোটি টাকা : রয়েছেন ধরা ছোঁয়ার বাহিরে। ময়মনসিংহ রেঞ্জের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত  গাজীপুর জেলা শাখা অন্তর্গত “শ্রীপুর উপজেলা” শাখার কমিটির অনুমোদন।  বেকারত্ব নিরসনে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের ৭ দফা প্রস্তাবনা নোয়াখালীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মতবিনিময়  তবে উদ্যোগ রাজনৈতিক’ আমরা রাজনৈতিক দল নই তাহলে কি নিজেদের জালে-ই ফেঁসে গেলো ছাত্র সংঘটন!

১১ দফা দাবিতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির(বিটিএ) সংবাদ সম্মেলন।

রিপোর্টার মোঃ শান্ত 
  • নিউজ প্রকাশের সময় : ০৪:০৩:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১ বার পড়া হয়েছে

শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ, সারাদেশে শিক্ষক লাঞ্ছিত ও জোরপূর্বক পদত্যাগ করানোর তীব্র প্রতিবাদে এবং পদত্যাগ পত্র বাতিলপূর্বক স্বপদে পুনর্বহালের আদেশ সম্বলিত প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)’র- সংবাদ সম্মেলন।তাঁরা এক লিখিত বিবৃতিতে জানান,১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী সর্ববৃহৎ ও সর্বপ্রাচীন শিক্ষক সংগঠন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি। শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি বৈষম্য এখন পাহাড়সম। এহেন বৈষম্য দূরীকরণের জন্য তারা দীর্ঘদিন যাবৎ আন্দোলন-সংগ্রাম করে এসেছে। বেসরকারি শিক্ষকগণ মাত্র ২৫% উৎসব ভাতা, ১,০০০ টাকা বাড়ি ভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পেয়ে থাকি। অবসরে যাবার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক/কর্মচারী টাকা প্রাপ্তির পূর্বেই অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেন যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তাছাড়া কয়েক বছর যাবৎ কোন প্রকার বাড়তি সুবিধা না দিয়েই অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক- কর্মচারীদের বেতন থেকে অমানবিকভাবে অতিরিক্ত ৪% কর্তন করা হচ্ছে। পূর্বে সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক -এর বেতন স্কেল একই থাকলেও বর্তমানে বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের চেয়ে এক ধাপ নিচে পেয়ে থাকেন। সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ৬৪ গ্রেডে ৩৫,৫০০/- টাকা ও বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ৭ম গ্রেডে ২৯,০০০/- টাকা এবং এন্ট্রি লেভেলে সরকারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক ১০ম গ্রেডে ১৬,০০০/- ও বেসরকারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক ১১তম গ্রেডে ১২,৫০০/- টাকা পেয়ে থাকেন। তাছাড়া সহকারী প্রধান শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল প্রদানের বিধান না থাকায় উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান হওয়ায় সহকারী প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে। নানা কারণে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনও এমপিওভূক্ত হতে পারেনি। এমপিওভূক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বদলীর কোন সুযোগ না থাকায় অনেকেই দূর-দূরান্তে শিক্ষকতা করার কারণে তাঁদের বৃদ্ধ বাবা-মাসহ পরিবার- পরিজন মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরির বয়স ৬৫ করা হলেও স্কুল-কলেজের শিক্ষক- কর্মচারীদের চাকরির বয়সসীমা এখনও ৬০ বছরই রয়েছে। শিক্ষাপ্রশাসনের কোন স্তরেই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পদায়নের কোন সুযোগ রাখা হয়নি। জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এ শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠনের কথা বলা হলেও এখনও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। বহু আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এখনও অনেকাংশেই অবাস্তবায়িত রয়েছে।শিক্ষা ব্যবস্থায় সরকারি ও বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। তাই জাতির বিবেক শিক্ষক হিসেবে তারা সকলের জন্য মানসম্মত শিক্ষার সমান সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে এসেছে। সর্বশেষ ২০২৩ সালে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (BTA)’র ব্যানারে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ১১ জুলাই থেকে ০১ আগস্ট-২০২৩ পর্যন্ত ২২ দিন লাগাতার অবস্থান ও পরিশেষে কাফনের কাপড় পরে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেছি। যে কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিচার্জসহ অতি বাড়াবাড়ির কারণে বিটিএ’র কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যক্ষ মোঃ বজলুর রহমান মিয়াসহ অনেক শিক্ষক-কর্মচারী আহত হন এবং ১ জন শিক্ষক মৃত্যুবরণ করেন। এমনকি আন্দোলনে নেতৃত্বদানের কারণে তৎকালীন শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনির রোষানলে পড়ে তাঁর নির্দেশে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (BTA)’র সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ কে ষড়যন্ত্র করে সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূতভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন। যা মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক স্থগিত করা স্বত্বেও তাঁকে যোগদান করতে দেয়া হয়নি। ডা. দীপু মনির নজিরবিহীন স্বেচ্ছাচারিতা ও বিরোধিতা স্বত্বেও অবিরাম কর্মসূচি চলাকালীন গত ০১ আগস্ট ২০২৩ তৎকালীন সরকারের সাথে দীর্ঘ আলোচনার পর আমাদের উত্থাপিত দাবিসমূহ যৌক্তিক বলে বিবেচিত হওয়ায় সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বিশেষ করে আর্থিক প্রাপ্তির ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বাড়ী ভাড়া ও চিকিসা ভাতাসহ বিদ্যমান সরকারি ও বেসরকারি বৈষম্যসমূহ দ্রুততম সময়ের মধ্যে দূরীকরণের প্রতিশ্রুতি দেয়ায় আমরা আন্দোলন স্থগিত করেছিলাম। পরিতাপের বিষয় বিগত সরকার প্রতিশ্রতি রক্ষা করেননি।এ সময় তাঁরা ১১ দফা দাবি পেশ করেন, (১) মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্টকরণসহ শিক্ষাক্ষেত্রে সকারি ও বেসরকারি বৈষম্য দূরিকরণের লক্ষ্যে “মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ” করা।২) বিদ্যমান শিক্ষা কারিকুলামের পরিবর্তে যুগোপযোগী, আধুনিক ও বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষা কারিকুলাম প্রবর্তন করা।(৩) সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বাড়ী ভাড়া ও চিকিসা ভাতা প্রদান করা।(৪) সরকারি স্কুলের ন্যায় বেসরকারি স্কুলের ‘প্রধান শিক্ষক’ -এর বেতন স্কেল ৬ষ্ঠ গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষক-এর ১০ম গ্রেডে এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক-এর উচ্চতর স্কেল প্রদান করা।(৫) এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচ.দে বণণী প্রথাবু করা।(৬) সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় পেনশন প্রথা চালুকরণ এবং চালু না হওয়া পর্যন্ত অবসর গ্রহণের ৬ মাসের মধ্যে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের পাওনা প্রদানসহ শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪% কর্তন বন্ধ করা।(৭) শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরির বয়স বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় ৬৫ বছরে উন্নীতকরণ।(৮ ) পাবলিক সার্ভিস কমিশনের ন্যায় শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠন এবং শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আনুপাতিক হারে এমপিওভূক্ত শিক্ষকদের পদায়ন করা।(৯) শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি ও বেসরকারি সকল বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এর দ্রুত বাস্তবায়ন করা।(১০) ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডি প্রথা বিলুপ্ত করে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ন্যায় পরিচালনা করা।(১১) স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা।সারাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একটি মহল ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অধ্যক্ষ/প্রধান শিক্ষকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষকদের লাঞ্ছিত ও সম্পূর্ণ অবৈধভাবে জোরপূর্বক পদত্যাগ করতে বাধ্য করছে। যা ইতোমধ্যেই আপনাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোন নেতা-কর্মী, যাঁদের সাহসী ও ত্যাগের বিনিময়ে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিগত সরকারের পতন হয়েছে তাঁদের কেউই শিক্ষক লাঞ্ছনার মত অপকর্মে লিপ্ত হতে পারেন না। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)’র পক্ষ থেকে-এর তীব্র প্রতিবাদ এবং উক্ত পদত্যাগ পত্র বাতিলপূর্বক স্বপদে পুনর্বহালের আদেশ সম্বলিত প্রজ্ঞাপন জারির জন্য বর্তমান সরকারের নিকট জোর দাবি জানায় তারা।তাঁরা প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন সরকার সকলের জন্য মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণের সমান সুযোগ সৃষ্টি, মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্টকরণসহ শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি বৈষম্য দূরিকরণের লক্ষ্যে উল্লেখিত ১১ দফা দাবি পূরণ এবং লাঞ্ছিত ও জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করা শিক্ষকদের পদত্যাগ পত্র বাতিলপূর্বক স্বপদে পুনর্বহালের আদেশ সম্বলিত প্রজ্ঞাপন জারি করার জন্য নির্দেশনা দেবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

১১ দফা দাবিতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির(বিটিএ) সংবাদ সম্মেলন।

নিউজ প্রকাশের সময় : ০৪:০৩:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ, সারাদেশে শিক্ষক লাঞ্ছিত ও জোরপূর্বক পদত্যাগ করানোর তীব্র প্রতিবাদে এবং পদত্যাগ পত্র বাতিলপূর্বক স্বপদে পুনর্বহালের আদেশ সম্বলিত প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)’র- সংবাদ সম্মেলন।তাঁরা এক লিখিত বিবৃতিতে জানান,১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী সর্ববৃহৎ ও সর্বপ্রাচীন শিক্ষক সংগঠন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি। শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি বৈষম্য এখন পাহাড়সম। এহেন বৈষম্য দূরীকরণের জন্য তারা দীর্ঘদিন যাবৎ আন্দোলন-সংগ্রাম করে এসেছে। বেসরকারি শিক্ষকগণ মাত্র ২৫% উৎসব ভাতা, ১,০০০ টাকা বাড়ি ভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পেয়ে থাকি। অবসরে যাবার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক/কর্মচারী টাকা প্রাপ্তির পূর্বেই অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেন যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তাছাড়া কয়েক বছর যাবৎ কোন প্রকার বাড়তি সুবিধা না দিয়েই অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক- কর্মচারীদের বেতন থেকে অমানবিকভাবে অতিরিক্ত ৪% কর্তন করা হচ্ছে। পূর্বে সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক -এর বেতন স্কেল একই থাকলেও বর্তমানে বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের চেয়ে এক ধাপ নিচে পেয়ে থাকেন। সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ৬৪ গ্রেডে ৩৫,৫০০/- টাকা ও বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ৭ম গ্রেডে ২৯,০০০/- টাকা এবং এন্ট্রি লেভেলে সরকারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক ১০ম গ্রেডে ১৬,০০০/- ও বেসরকারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক ১১তম গ্রেডে ১২,৫০০/- টাকা পেয়ে থাকেন। তাছাড়া সহকারী প্রধান শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল প্রদানের বিধান না থাকায় উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান হওয়ায় সহকারী প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে। নানা কারণে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনও এমপিওভূক্ত হতে পারেনি। এমপিওভূক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বদলীর কোন সুযোগ না থাকায় অনেকেই দূর-দূরান্তে শিক্ষকতা করার কারণে তাঁদের বৃদ্ধ বাবা-মাসহ পরিবার- পরিজন মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরির বয়স ৬৫ করা হলেও স্কুল-কলেজের শিক্ষক- কর্মচারীদের চাকরির বয়সসীমা এখনও ৬০ বছরই রয়েছে। শিক্ষাপ্রশাসনের কোন স্তরেই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পদায়নের কোন সুযোগ রাখা হয়নি। জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এ শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠনের কথা বলা হলেও এখনও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। বহু আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এখনও অনেকাংশেই অবাস্তবায়িত রয়েছে।শিক্ষা ব্যবস্থায় সরকারি ও বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। তাই জাতির বিবেক শিক্ষক হিসেবে তারা সকলের জন্য মানসম্মত শিক্ষার সমান সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে এসেছে। সর্বশেষ ২০২৩ সালে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (BTA)’র ব্যানারে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ১১ জুলাই থেকে ০১ আগস্ট-২০২৩ পর্যন্ত ২২ দিন লাগাতার অবস্থান ও পরিশেষে কাফনের কাপড় পরে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেছি। যে কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিচার্জসহ অতি বাড়াবাড়ির কারণে বিটিএ’র কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যক্ষ মোঃ বজলুর রহমান মিয়াসহ অনেক শিক্ষক-কর্মচারী আহত হন এবং ১ জন শিক্ষক মৃত্যুবরণ করেন। এমনকি আন্দোলনে নেতৃত্বদানের কারণে তৎকালীন শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনির রোষানলে পড়ে তাঁর নির্দেশে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (BTA)’র সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ কে ষড়যন্ত্র করে সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূতভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন। যা মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক স্থগিত করা স্বত্বেও তাঁকে যোগদান করতে দেয়া হয়নি। ডা. দীপু মনির নজিরবিহীন স্বেচ্ছাচারিতা ও বিরোধিতা স্বত্বেও অবিরাম কর্মসূচি চলাকালীন গত ০১ আগস্ট ২০২৩ তৎকালীন সরকারের সাথে দীর্ঘ আলোচনার পর আমাদের উত্থাপিত দাবিসমূহ যৌক্তিক বলে বিবেচিত হওয়ায় সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বিশেষ করে আর্থিক প্রাপ্তির ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বাড়ী ভাড়া ও চিকিসা ভাতাসহ বিদ্যমান সরকারি ও বেসরকারি বৈষম্যসমূহ দ্রুততম সময়ের মধ্যে দূরীকরণের প্রতিশ্রুতি দেয়ায় আমরা আন্দোলন স্থগিত করেছিলাম। পরিতাপের বিষয় বিগত সরকার প্রতিশ্রতি রক্ষা করেননি।এ সময় তাঁরা ১১ দফা দাবি পেশ করেন, (১) মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্টকরণসহ শিক্ষাক্ষেত্রে সকারি ও বেসরকারি বৈষম্য দূরিকরণের লক্ষ্যে “মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ” করা।২) বিদ্যমান শিক্ষা কারিকুলামের পরিবর্তে যুগোপযোগী, আধুনিক ও বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষা কারিকুলাম প্রবর্তন করা।(৩) সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বাড়ী ভাড়া ও চিকিসা ভাতা প্রদান করা।(৪) সরকারি স্কুলের ন্যায় বেসরকারি স্কুলের ‘প্রধান শিক্ষক’ -এর বেতন স্কেল ৬ষ্ঠ গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষক-এর ১০ম গ্রেডে এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক-এর উচ্চতর স্কেল প্রদান করা।(৫) এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচ.দে বণণী প্রথাবু করা।(৬) সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় পেনশন প্রথা চালুকরণ এবং চালু না হওয়া পর্যন্ত অবসর গ্রহণের ৬ মাসের মধ্যে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের পাওনা প্রদানসহ শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪% কর্তন বন্ধ করা।(৭) শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরির বয়স বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় ৬৫ বছরে উন্নীতকরণ।(৮ ) পাবলিক সার্ভিস কমিশনের ন্যায় শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠন এবং শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আনুপাতিক হারে এমপিওভূক্ত শিক্ষকদের পদায়ন করা।(৯) শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি ও বেসরকারি সকল বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এর দ্রুত বাস্তবায়ন করা।(১০) ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডি প্রথা বিলুপ্ত করে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ন্যায় পরিচালনা করা।(১১) স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা।সারাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একটি মহল ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অধ্যক্ষ/প্রধান শিক্ষকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষকদের লাঞ্ছিত ও সম্পূর্ণ অবৈধভাবে জোরপূর্বক পদত্যাগ করতে বাধ্য করছে। যা ইতোমধ্যেই আপনাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোন নেতা-কর্মী, যাঁদের সাহসী ও ত্যাগের বিনিময়ে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিগত সরকারের পতন হয়েছে তাঁদের কেউই শিক্ষক লাঞ্ছনার মত অপকর্মে লিপ্ত হতে পারেন না। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)’র পক্ষ থেকে-এর তীব্র প্রতিবাদ এবং উক্ত পদত্যাগ পত্র বাতিলপূর্বক স্বপদে পুনর্বহালের আদেশ সম্বলিত প্রজ্ঞাপন জারির জন্য বর্তমান সরকারের নিকট জোর দাবি জানায় তারা।তাঁরা প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন সরকার সকলের জন্য মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণের সমান সুযোগ সৃষ্টি, মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্টকরণসহ শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি বৈষম্য দূরিকরণের লক্ষ্যে উল্লেখিত ১১ দফা দাবি পূরণ এবং লাঞ্ছিত ও জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করা শিক্ষকদের পদত্যাগ পত্র বাতিলপূর্বক স্বপদে পুনর্বহালের আদেশ সম্বলিত প্রজ্ঞাপন জারি করার জন্য নির্দেশনা দেবেন।