ঢাকা ০২:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৪ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাজশাহীতে পুলি*শ দেখে নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে সাবেক কাউন্সিলরের মৃ*ত্যু সাংবাদিকদের রুটি-রুজি নিয়ে খেলবেন না ছাত্রদল নেতা কয়েস আহমদ এর কেক কাঁটার মধ্যে দিয়ে জন্মদিন পালন প্রবাসী স্ত্রীকে ফেরত পেতে চাই কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ ৬ বছর পর প্রবাসী স্ত্রী কে ফিরে পেতে এয়ারপোর্টে অঝোরে কাদলেন যুবক , ভেতরে ভেতরে আমরা সবাই শ্রমিক: ফেসবুক স্ট্যাটাসে বললেন নাগরপুরের ইউএনও আরাফাত মোহাম্মদ নোমান নাগরপুরে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালনে পাঁচ সংগঠনের বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও কর্মসূচি নাগরপুরে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন সাভার উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার্স সোসাইটি (সুজ) এর নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন।

কিডনি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণের উপায়।

রিপোর্টার রোজিনা বেগম
  • নিউজ প্রকাশের সময় : ০৬:৫৯:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫ ২৫ বার পড়া হয়েছে

নিজের ও জাতির কিডনি স্বাস্থ্য সুরক্ষা করতে হলে তিনটি শব্দের অর্থ খুব ভালো করে বুঝাতে হবে।Common Harmful Preventable  অর্থাৎ কিডনি রোগের প্রাদুর্ভাব ব্যাপক, পরিনতি ভয়াবহ হলেও কিডনি রোগ প্রতিরোধযোগ্য।কিডনি রোগের হার ব্যাপক। সারা বিশ্বে শুধু দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ বা সিকেডি রোগীর সংখ্যা ৮৫ কোটির অধিক। এই রোগের হার দিন দিন বাড়ছে। উন্নয়নশীল বা স্বল্পোন্নত দেশে এই রোগের হার অনেক বেশি। বিভিন্ন পরিসংখ্যান থেকে ধারণা করা হয় যে, বাংলাদেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ। যদি কিডনি রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করে চিকিৎসা না করা যায় তবে কিডনি ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ বিকল হয়ে যায়, যার চিকিৎসা ব্যায় অত্যন্ত বেশি।বাংলাদেশের প্রায় ৪০ হাজার রোগী কিডনি বিকল হয়ে অকাল মৃত্যুবরণ করে। আরো ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ আকস্মিক কিডনি বিকলে আক্রান্ত হয়।মৃত্যুর কারণ হিসেবে ১৯৯০ সালে কিডনি রোগ ছিল ১৯তম স্থানে। বর্তমানে এসেছে ৭ম স্থানে, এভাবে চলতে থাকলে ২০৪০ সালে দাড়াবে ৫ম স্থানে।কিডনি রোগ মারাত্মক বা ভয়াবহ কেন?প্রথম ৭০ থেকে ৯০ ভাগ নষ্ট হওয়ার আগে অনেক ক্ষেত্রে কোন লক্ষণ দেখা দেয় না। তাই এই রোগকে বলা হয় নীরব ঘাতক।দ্বিতীয় কিডনি রোগ অন্য রোগের ঝুঁকি অনেক গুণে বাড়িয়ে দেয়। এই জন্য কিডনি রোগকে বলা হয় ডিজিজ মাল্টিপ্লাইয়ার। যেমন স্বল্প মাত্রায়ও সিকেডি থাকলে হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি ১০ গুন বেড়ে যেতে পারে। তেমনি আরো অনেক রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।তৃতীয়- কিডনি সম্পূর্ণ বিকল হয়ে গেলে তার চিকিৎসা এত ব্যয়বহুল যে আমাদের মত দেশের শতকরা ১০ ভাগ লোকও তা বহন করতে পারে না। ফলে ৮০ থেকে ৯০ ভাগ কিডনি বিকল রোগী অকাল মৃত্যুবরণ করে। চিকিৎসা খরচ মেটাতে গিয়ে অনেক পরিবার দেউলিয়া হয়ে যায়।আশার আলো এই যে কিডনি রোগ প্রতিরোধযোগ্য। যেখানে অতিরিক্ত ব্যায়ের কারনে ১০ ভাগ লোক চিকিৎসা নিতে হিমশিম খায় সেখানে একটু সচেতন হলে ৬০ থেকে ৭০ ভাগ ক্ষেত্রে এই ভয়াবহ কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা যায়।প্রতিরোধের প্রধান ২টি উপায় প্রথমত। প্রাথমিক অবস্থায় সুপ্ত কিডনি রোগ নির্ণয় করে তা চিকিৎসা করা। যারা কিডনি রোগের ঝুঁকিতে আছে তাদের মাত্র দুটি সহজ পরীক্ষার মাধ্যমে প্রাথমিক অবস্থায় কিডনি রোগ নির্ণয় করা যায়, একটি প্রস্রাবে প্রোটিন যায় কি না। অন্যটি রক্তের ক্রিয়েটিনিন থেকে ইজিএফআর নির্ণয় করে কিডনি শতভাগে কত ভাগ কাজ করছে তা নির্ণয় করা যায়। এই দুটি পরীক্ষা প্রাথমিক পর্যায়ের হাসপাতালেও করা যেতে পারে।কিডনি রোগের ঝুঁকিতে আছে কারা?যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, বংশে কিডনি রোগ আছে, ধূমপায়ী, মাদকসেবী, অতিরিক্ত ওজন, বেশিদিন ব্যথার বড়ি খেয়েছে, বারে বারে কিডনিতে পাথর বা মূত্রতন্ত্রের প্রদাহ হয়। শিশুকালে কিডনি রোগ থাকলে। এমনকি বয়স ৫০ এর উপরে গেলে কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়ে। যারা ঝুঁকিতে আছেন তাদের বছরে অন্তত দুইবার কিডনি পরীক্ষা করিয়ে নেয়া উচিত।সুস্থ জীবনধারা। কিডনি ভালো রাখতে সুস্থ জীবনধারা চর্চা অপরিহার্য। ৮টি স্বর্ণালী বা গুরুত্বপূর্ণ উপায় নিয়মিত মেনে চললে ৬০ থেকে ৭০ ভাগ ক্ষেত্রে কিডনি রোগ প্রতিরোধ করা যায়।

১. নিয়মিত ব্যায়াম ও কায়িক পরিশ্রম।

২. উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ।

৩. সুষম ও পরিমিত খাবার গ্রহণ।

৪. পর্যাপ্ত পানি পান।

৫. ওজন নিয়ন্ত্রণ।

৬. ধূমপান ও মাদক পরিহার।

৭. ঔষধ সেবন ডাক্তারের পরামর্শে।

৮. নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা।

কিডনি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রধান চ্যালেঞ্জ বা প্রতিবন্ধকতা কি কি?

১. সাধারণ জনগণের মধ্যে সচেতনতার অভাব। কিডনি রোগের ঝুঁকি, লক্ষণ সম্পর্কে অজ্ঞত্য, চিকিৎসা সম্পর্কে ভুল ধারণা।

২. প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার সুযোগ সীমিত। অনেক অঞ্চলে কিডনি রোগ নির্ণয়ের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকা।

৩. আর্থিক সীমাবদ্ধতা-ডায়ালাইসিস ও কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের ব্যায় অনেক বেশি। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার জন্য পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা বা বাজেটের অভাব।

৪. কিডনি বিশেষজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীর স্বল্পতা। জাপানে প্রতি মিলিয়ন লোকের জন্য ৩৪ জন কিডনি বিশেষজ্ঞ, পক্ষান্তরে বাংলাদেশ আছে ২ জনেরও কম। অন্যদিকে সাধারণ চিকিৎসকগণ কিডনি সম্পর্কে কম সচেতন।

৫. অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা ও ঝুঁকির কারণ বৃদ্ধি। যেমন ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ ক্রমাগত বাড়ছে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়ামের অভাবে কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়ছে।

৬. সাংস্কৃতিক ও কুসংস্কার, ঝাড়, ফুঁক, কবিরাজ, হারবাল চর্চা করতে গিয়ে বিলম্বে রোগ নির্ণয়ও কিডনি বিকলের ঝুঁকি বাড়ে।

চ্যালেঞ্জ বা প্রতিবন্ধকতা উত্তরণের উপায় কি কি।

নীতিনির্ধারক, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

১. নীতিনির্ধারক। কিডনি রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী পদক্ষেপ

• উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য জাতীয় পর্যায়ে স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম চালু করা।

সুলভ মূল্যে চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ঔষধ সরবরাহ নিশ্চিত করা।

উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন করা।

২. স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী: সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রাথমিক রোগ নির্ণয়

সাধারণ চিকিৎসকদের কিডনি রোগের প্রাথমিক চিকিৎসায় প্রশিক্ষণ প্রদান।

জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কমিউনিটি আউটরিচ প্রোগ্রাম ও বিনামূল্যে স্ক্রিনিং ক্যাম্পের আয়োজন।

গণমাধ্যমের সহায়তায় কিডনি স্বাস্থ্য সম্পর্কে প্রচার করা।

৩. আর্থিক প্রতিষ্ঠান: চিকিৎসার ব্যয় কমানো ও সহায়তা প্রদান

• কিডনি রোগীদের জন্য স্বাস্থ্যবীমা চালু করা।

কিডনি রোগীদের জন্য মাইক্রোফাইন্যান্স বা স্বল্প সুদের ঋণের ব্যবস্থা করা।

• সাশ্রয়ী কিডনি চিকিৎসা গবেষণা ও উদ্ভাবনে সহায়তা করা।

আসুন কিডনি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবাই মিলে এক যোগে কাজ করি তাহলে সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে সবার জন্য কিডনি স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

কিডনি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণের উপায়।

নিউজ প্রকাশের সময় : ০৬:৫৯:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫

নিজের ও জাতির কিডনি স্বাস্থ্য সুরক্ষা করতে হলে তিনটি শব্দের অর্থ খুব ভালো করে বুঝাতে হবে।Common Harmful Preventable  অর্থাৎ কিডনি রোগের প্রাদুর্ভাব ব্যাপক, পরিনতি ভয়াবহ হলেও কিডনি রোগ প্রতিরোধযোগ্য।কিডনি রোগের হার ব্যাপক। সারা বিশ্বে শুধু দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ বা সিকেডি রোগীর সংখ্যা ৮৫ কোটির অধিক। এই রোগের হার দিন দিন বাড়ছে। উন্নয়নশীল বা স্বল্পোন্নত দেশে এই রোগের হার অনেক বেশি। বিভিন্ন পরিসংখ্যান থেকে ধারণা করা হয় যে, বাংলাদেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ। যদি কিডনি রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করে চিকিৎসা না করা যায় তবে কিডনি ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ বিকল হয়ে যায়, যার চিকিৎসা ব্যায় অত্যন্ত বেশি।বাংলাদেশের প্রায় ৪০ হাজার রোগী কিডনি বিকল হয়ে অকাল মৃত্যুবরণ করে। আরো ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ আকস্মিক কিডনি বিকলে আক্রান্ত হয়।মৃত্যুর কারণ হিসেবে ১৯৯০ সালে কিডনি রোগ ছিল ১৯তম স্থানে। বর্তমানে এসেছে ৭ম স্থানে, এভাবে চলতে থাকলে ২০৪০ সালে দাড়াবে ৫ম স্থানে।কিডনি রোগ মারাত্মক বা ভয়াবহ কেন?প্রথম ৭০ থেকে ৯০ ভাগ নষ্ট হওয়ার আগে অনেক ক্ষেত্রে কোন লক্ষণ দেখা দেয় না। তাই এই রোগকে বলা হয় নীরব ঘাতক।দ্বিতীয় কিডনি রোগ অন্য রোগের ঝুঁকি অনেক গুণে বাড়িয়ে দেয়। এই জন্য কিডনি রোগকে বলা হয় ডিজিজ মাল্টিপ্লাইয়ার। যেমন স্বল্প মাত্রায়ও সিকেডি থাকলে হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি ১০ গুন বেড়ে যেতে পারে। তেমনি আরো অনেক রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।তৃতীয়- কিডনি সম্পূর্ণ বিকল হয়ে গেলে তার চিকিৎসা এত ব্যয়বহুল যে আমাদের মত দেশের শতকরা ১০ ভাগ লোকও তা বহন করতে পারে না। ফলে ৮০ থেকে ৯০ ভাগ কিডনি বিকল রোগী অকাল মৃত্যুবরণ করে। চিকিৎসা খরচ মেটাতে গিয়ে অনেক পরিবার দেউলিয়া হয়ে যায়।আশার আলো এই যে কিডনি রোগ প্রতিরোধযোগ্য। যেখানে অতিরিক্ত ব্যায়ের কারনে ১০ ভাগ লোক চিকিৎসা নিতে হিমশিম খায় সেখানে একটু সচেতন হলে ৬০ থেকে ৭০ ভাগ ক্ষেত্রে এই ভয়াবহ কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা যায়।প্রতিরোধের প্রধান ২টি উপায় প্রথমত। প্রাথমিক অবস্থায় সুপ্ত কিডনি রোগ নির্ণয় করে তা চিকিৎসা করা। যারা কিডনি রোগের ঝুঁকিতে আছে তাদের মাত্র দুটি সহজ পরীক্ষার মাধ্যমে প্রাথমিক অবস্থায় কিডনি রোগ নির্ণয় করা যায়, একটি প্রস্রাবে প্রোটিন যায় কি না। অন্যটি রক্তের ক্রিয়েটিনিন থেকে ইজিএফআর নির্ণয় করে কিডনি শতভাগে কত ভাগ কাজ করছে তা নির্ণয় করা যায়। এই দুটি পরীক্ষা প্রাথমিক পর্যায়ের হাসপাতালেও করা যেতে পারে।কিডনি রোগের ঝুঁকিতে আছে কারা?যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, বংশে কিডনি রোগ আছে, ধূমপায়ী, মাদকসেবী, অতিরিক্ত ওজন, বেশিদিন ব্যথার বড়ি খেয়েছে, বারে বারে কিডনিতে পাথর বা মূত্রতন্ত্রের প্রদাহ হয়। শিশুকালে কিডনি রোগ থাকলে। এমনকি বয়স ৫০ এর উপরে গেলে কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়ে। যারা ঝুঁকিতে আছেন তাদের বছরে অন্তত দুইবার কিডনি পরীক্ষা করিয়ে নেয়া উচিত।সুস্থ জীবনধারা। কিডনি ভালো রাখতে সুস্থ জীবনধারা চর্চা অপরিহার্য। ৮টি স্বর্ণালী বা গুরুত্বপূর্ণ উপায় নিয়মিত মেনে চললে ৬০ থেকে ৭০ ভাগ ক্ষেত্রে কিডনি রোগ প্রতিরোধ করা যায়।

১. নিয়মিত ব্যায়াম ও কায়িক পরিশ্রম।

২. উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ।

৩. সুষম ও পরিমিত খাবার গ্রহণ।

৪. পর্যাপ্ত পানি পান।

৫. ওজন নিয়ন্ত্রণ।

৬. ধূমপান ও মাদক পরিহার।

৭. ঔষধ সেবন ডাক্তারের পরামর্শে।

৮. নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা।

কিডনি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রধান চ্যালেঞ্জ বা প্রতিবন্ধকতা কি কি?

১. সাধারণ জনগণের মধ্যে সচেতনতার অভাব। কিডনি রোগের ঝুঁকি, লক্ষণ সম্পর্কে অজ্ঞত্য, চিকিৎসা সম্পর্কে ভুল ধারণা।

২. প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার সুযোগ সীমিত। অনেক অঞ্চলে কিডনি রোগ নির্ণয়ের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকা।

৩. আর্থিক সীমাবদ্ধতা-ডায়ালাইসিস ও কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের ব্যায় অনেক বেশি। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার জন্য পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা বা বাজেটের অভাব।

৪. কিডনি বিশেষজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীর স্বল্পতা। জাপানে প্রতি মিলিয়ন লোকের জন্য ৩৪ জন কিডনি বিশেষজ্ঞ, পক্ষান্তরে বাংলাদেশ আছে ২ জনেরও কম। অন্যদিকে সাধারণ চিকিৎসকগণ কিডনি সম্পর্কে কম সচেতন।

৫. অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা ও ঝুঁকির কারণ বৃদ্ধি। যেমন ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ ক্রমাগত বাড়ছে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়ামের অভাবে কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়ছে।

৬. সাংস্কৃতিক ও কুসংস্কার, ঝাড়, ফুঁক, কবিরাজ, হারবাল চর্চা করতে গিয়ে বিলম্বে রোগ নির্ণয়ও কিডনি বিকলের ঝুঁকি বাড়ে।

চ্যালেঞ্জ বা প্রতিবন্ধকতা উত্তরণের উপায় কি কি।

নীতিনির্ধারক, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

১. নীতিনির্ধারক। কিডনি রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী পদক্ষেপ

• উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য জাতীয় পর্যায়ে স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম চালু করা।

সুলভ মূল্যে চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ঔষধ সরবরাহ নিশ্চিত করা।

উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন করা।

২. স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী: সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রাথমিক রোগ নির্ণয়

সাধারণ চিকিৎসকদের কিডনি রোগের প্রাথমিক চিকিৎসায় প্রশিক্ষণ প্রদান।

জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কমিউনিটি আউটরিচ প্রোগ্রাম ও বিনামূল্যে স্ক্রিনিং ক্যাম্পের আয়োজন।

গণমাধ্যমের সহায়তায় কিডনি স্বাস্থ্য সম্পর্কে প্রচার করা।

৩. আর্থিক প্রতিষ্ঠান: চিকিৎসার ব্যয় কমানো ও সহায়তা প্রদান

• কিডনি রোগীদের জন্য স্বাস্থ্যবীমা চালু করা।

কিডনি রোগীদের জন্য মাইক্রোফাইন্যান্স বা স্বল্প সুদের ঋণের ব্যবস্থা করা।

• সাশ্রয়ী কিডনি চিকিৎসা গবেষণা ও উদ্ভাবনে সহায়তা করা।

আসুন কিডনি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবাই মিলে এক যোগে কাজ করি তাহলে সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে সবার জন্য কিডনি স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা যাবে।