ঢাকা ০৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
অর্ধাহারে-অনাহারে ১৪শ চা শ্রমিক তিন মাস ধরে বন্ধ মজুরি নতুন ভিসি ওমর ফারুক চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের  চাঁদায় নদী ভাঙন রোধের চেষ্টা কুড়িগ্রামে গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রম- নাগরপুরে ডিমের দাম বৃদ্ধি , ক্রেতাদের মাঝে অস্বস্থির ক্ষোভ  নোয়াখালীতে ফকির চাড়ুমিজি মাজারে চলছে লক্ষ লক্ষ টাকার রমরমা বাণিজ্য শেরপুরে ছাত্র অধিকার পরিষদের জনসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ  শ্রমিকদের সংঘর্ষ, নিহত ১ আশুলিয়ায় দুই পোশাক কারখানার  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস পুনর্গঠনের লক্ষ্যে ১২ দফা  বিশ্বের সকল মানুষ যেন মহানবী (সা.)-এর শিক্ষা, আদর্শ ও ত্যাগে উজ্জীবিত হয়ে উঠে। নাগরপুরে কবরস্থানের সৌন্দর্য বর্ধনে ধুবড়িয়া ব্রাদার্সের দৃষ্টিনন্দন উদ্যোগ 

এক বছরের মাথায় চিলাহাটি এক্সপ্রেস কোচ লক্কড়ঝক্কড়

রিপোর্টার স্বপন 
  • নিউজ প্রকাশের সময় : ০৫:৫০:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মার্চ ২০২৪ ৪৬ বার পড়া হয়েছে

 উত্তরের সর্বশেষ সীমান্তবর্তী এলাকায় চিলাহাটি বাসীর দীর্ঘদিনের প্রানের দাবির প্রেক্ষিতে চিলাহাটি-ঢাকা দিবাকালীন চিলাহাটি এক্সপ্রেস নামে আরেকটি আন্তঃনগর ট্রেন চালু করা হয়। কিন্তু বছর যেতে না যেতেই চাকা ক্ষয়ে বাঁকা হয়ে যাওয়া, রানিংয়ে এক্সেল কয়েল স্প্রিং ভেঙে পড়া, রুফ সিলিং খুলে যাওয়াসহ কোচগুলোতে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। যাত্রীদের ভাষায় টেনটি লক্কড়ঝক্কড়।২০২৩ সালের ৪ জুন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ট্রেনটি চলাচলের উদ্বোধন করেন।জানা যায়- উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে চীনের থাংশানের কোম্পানি সিআরআরসি থেকে প্রায় ১ বছর আগে এ ট্রেনের কোচগুলো আমদানি করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী এসব কোচের ওয়ারেন্টি ২ বছরের। কিন্তু কোচগুলো ট্রেনে যুক্ত করার পরপরই দেখা দিয়েছে নানা সমস্যা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রেন পরীক্ষক (টিএক্সআর) বলেন- কোচের চাকা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ক্ষয় হচ্ছে। চলন্ত অবস্থায় ব্রেক প্যাড পড়ে যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে নতুন কোচের স্প্রিং ২ থেকে ৩ বছর পরে ভাঙলেও এসব কোচের ১ বছর না যেতেই রানিংয়ে এক্সেল কয়েল স্প্রিং ভেঙে যাচ্ছে। এ ছাড়া প্রাইমারি ডাম্পার অকার্যকর, অস্বাভাবিকভাবে তেল লিকেজ হচ্ছে। দ্রুত পাওয়ার কার গরম হয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনের এক যাত্রী বলেন- বেশি ভাগ ফ্যানই অচল। কোচে পানির ট্যাংক ভরা থাকলেও হ্যান্ড শাওয়ারে ও পানির কলে পানি আসে না। জানালার স্যুট বোল্ট খুলে যায়। বায়ো টয়লেটের সরবরাহ লাইন দিয়ে মল ও নোংরা পানি পড়ে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এ অবস্থায় ভোগান্তি নিয়ে অনেকটা বাধ্য হয়েই এই ট্রেনে ভ্রমণ করতে হচ্ছে।সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার সিঅ্যান্ডডব্লিউ মেশিন শপ সূত্র জানায়, বাংলাদেশ রেলওয়েতে বিজি এমডি-৫২৩ (চায়না-২০২৩) ১০০টি কোচ রেলওয়ের যানবাহন বহরে যুক্ত হয়। এ কোচগুলো নিয়মমাফিক প্রতি ১ বছর পরপর মেরামতে আসার কথা থাকলেও চাকার বিভিন্ন ত্রুটির কারণে এক বছরের আগেই বিশেষ রিপেয়ারের প্রয়োজন পড়ছে। এসব কোচ বিভিন্ন সময় সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় মেরামতে এলে চাকা টার্নিংয়ের সময় চাকায় ব্লোহোল বা ক্র্যাক দেখা যায়। স্বাভাবিকভাবে চাকা ৮ মিলিমিটার থেকে ১০ মিলিমিটার টার্নিংয়ের প্রয়োজন হয়। কিন্তু চায়না কোচে ব্লোহোল বা ক্র্যাকের কারণে অনেক বেশি অর্থাৎ ১৫ মিলিমিটার থেকে ২০ মিলিমিটার, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তার চেয়েও বেশি টার্নিংয়ের প্রয়োজন হচ্ছে। ফলে চাকার স্থায়িত্বকাল আগের চেয়ে অনেক কমে যাচ্ছে।রেলওয়ে শ্রমিক ইউনিয়ন সৈয়দপুর কারখানা শাখার সাধারণ সম্পাদক শেখ রোবায়েতুর রহমান বলেন- চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনের কোচগুলো চীন থেকে এক বছরের কম সময়ে কেনা হয়েছে। এখনই সমস্যা দেখা দিয়েছে। অথচ ইন্দোনেশিয়া ও ভারত থেকে আনা রেলের কোচ গত ৬-৭ বছর চলছে সমস্যা ছাড়াই। এ নিয়ে মোবাইল ফোনে কথা হয় রেলওয়ের যুগ্ম মহাপরিচালক (যান্ত্রিক) তাবাসসুম বিনতে ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ওয়ারেন্টি সময়ে চুক্তি অনুযায়ী দেখভাল করার দায়িত্ব আমদানি করা কোম্পানির। কিন্তু এ সময় ত্রুটি দেখা দিলে বিষয়টি আমাকে বিভাগীয়ভাবে জানানোর কথা। তবে এখনো আমাকে জানানো হয়নি। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

এক বছরের মাথায় চিলাহাটি এক্সপ্রেস কোচ লক্কড়ঝক্কড়

নিউজ প্রকাশের সময় : ০৫:৫০:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মার্চ ২০২৪

 উত্তরের সর্বশেষ সীমান্তবর্তী এলাকায় চিলাহাটি বাসীর দীর্ঘদিনের প্রানের দাবির প্রেক্ষিতে চিলাহাটি-ঢাকা দিবাকালীন চিলাহাটি এক্সপ্রেস নামে আরেকটি আন্তঃনগর ট্রেন চালু করা হয়। কিন্তু বছর যেতে না যেতেই চাকা ক্ষয়ে বাঁকা হয়ে যাওয়া, রানিংয়ে এক্সেল কয়েল স্প্রিং ভেঙে পড়া, রুফ সিলিং খুলে যাওয়াসহ কোচগুলোতে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। যাত্রীদের ভাষায় টেনটি লক্কড়ঝক্কড়।২০২৩ সালের ৪ জুন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ট্রেনটি চলাচলের উদ্বোধন করেন।জানা যায়- উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে চীনের থাংশানের কোম্পানি সিআরআরসি থেকে প্রায় ১ বছর আগে এ ট্রেনের কোচগুলো আমদানি করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী এসব কোচের ওয়ারেন্টি ২ বছরের। কিন্তু কোচগুলো ট্রেনে যুক্ত করার পরপরই দেখা দিয়েছে নানা সমস্যা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রেন পরীক্ষক (টিএক্সআর) বলেন- কোচের চাকা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ক্ষয় হচ্ছে। চলন্ত অবস্থায় ব্রেক প্যাড পড়ে যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে নতুন কোচের স্প্রিং ২ থেকে ৩ বছর পরে ভাঙলেও এসব কোচের ১ বছর না যেতেই রানিংয়ে এক্সেল কয়েল স্প্রিং ভেঙে যাচ্ছে। এ ছাড়া প্রাইমারি ডাম্পার অকার্যকর, অস্বাভাবিকভাবে তেল লিকেজ হচ্ছে। দ্রুত পাওয়ার কার গরম হয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনের এক যাত্রী বলেন- বেশি ভাগ ফ্যানই অচল। কোচে পানির ট্যাংক ভরা থাকলেও হ্যান্ড শাওয়ারে ও পানির কলে পানি আসে না। জানালার স্যুট বোল্ট খুলে যায়। বায়ো টয়লেটের সরবরাহ লাইন দিয়ে মল ও নোংরা পানি পড়ে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এ অবস্থায় ভোগান্তি নিয়ে অনেকটা বাধ্য হয়েই এই ট্রেনে ভ্রমণ করতে হচ্ছে।সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার সিঅ্যান্ডডব্লিউ মেশিন শপ সূত্র জানায়, বাংলাদেশ রেলওয়েতে বিজি এমডি-৫২৩ (চায়না-২০২৩) ১০০টি কোচ রেলওয়ের যানবাহন বহরে যুক্ত হয়। এ কোচগুলো নিয়মমাফিক প্রতি ১ বছর পরপর মেরামতে আসার কথা থাকলেও চাকার বিভিন্ন ত্রুটির কারণে এক বছরের আগেই বিশেষ রিপেয়ারের প্রয়োজন পড়ছে। এসব কোচ বিভিন্ন সময় সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় মেরামতে এলে চাকা টার্নিংয়ের সময় চাকায় ব্লোহোল বা ক্র্যাক দেখা যায়। স্বাভাবিকভাবে চাকা ৮ মিলিমিটার থেকে ১০ মিলিমিটার টার্নিংয়ের প্রয়োজন হয়। কিন্তু চায়না কোচে ব্লোহোল বা ক্র্যাকের কারণে অনেক বেশি অর্থাৎ ১৫ মিলিমিটার থেকে ২০ মিলিমিটার, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তার চেয়েও বেশি টার্নিংয়ের প্রয়োজন হচ্ছে। ফলে চাকার স্থায়িত্বকাল আগের চেয়ে অনেক কমে যাচ্ছে।রেলওয়ে শ্রমিক ইউনিয়ন সৈয়দপুর কারখানা শাখার সাধারণ সম্পাদক শেখ রোবায়েতুর রহমান বলেন- চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনের কোচগুলো চীন থেকে এক বছরের কম সময়ে কেনা হয়েছে। এখনই সমস্যা দেখা দিয়েছে। অথচ ইন্দোনেশিয়া ও ভারত থেকে আনা রেলের কোচ গত ৬-৭ বছর চলছে সমস্যা ছাড়াই। এ নিয়ে মোবাইল ফোনে কথা হয় রেলওয়ের যুগ্ম মহাপরিচালক (যান্ত্রিক) তাবাসসুম বিনতে ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ওয়ারেন্টি সময়ে চুক্তি অনুযায়ী দেখভাল করার দায়িত্ব আমদানি করা কোম্পানির। কিন্তু এ সময় ত্রুটি দেখা দিলে বিষয়টি আমাকে বিভাগীয়ভাবে জানানোর কথা। তবে এখনো আমাকে জানানো হয়নি। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হবে।