ঢাকা ০৫:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে চায় নির্বাচন কমিশন।

রিপোর্টার মেহেদী হাসান অলি 
  • নিউজ প্রকাশের সময় : ০৬:১০:০৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ২৪১ বার পড়া হয়েছে

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে চায় নির্বাচন কমিশন

 

বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে চায় নির্বাচন কমিশন।এজন্য সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন। সোমবার সেনাবাহিনীর তরফ থেকে জানানো হয়েছে,রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পেলে তারা কাজ শুরু করতে পারবে।সাধারণত নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয় নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য। অতীতে দেখা গেছে সেনাবাহিনী বেসামরিক প্রশাসনের সহযোগিতায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করেছে।

নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করার প্রয়োজন হচ্ছে কেন?এ প্রশ্ন তুলছেন পর্যবেক্ষকরা।এই নির্বাচনটাকে তো মানুষ গ্রহণ করতে পারছে না।এটার প্রস্তুতিটাই এমন যে সাধারণ মানুষ থেকে বড্ড বিচ্ছিন্নভাবে জিনিসটা ঘটছে।সেনাবাহিনী যা বলেছে নির্বাচন কমিশনের সাথে বৈঠকের পরে সেনাবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সোমবার সাংবাদিকদের বলেন,২৯শে ডিসেম্বর থেকে ১০ই জানুয়ারি সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে কথা হয়েছে। বিষয়টিকে ‘প্রারম্ভিক আলোচনা হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি।একটা সুন্দর আলোচনা হয়েছে। ওনাদের সাথে কথা বলে মনে হয়েছে যে ওনারা চাচ্ছেন যে একটা ফ্রি, ফেয়ার ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন যেন হয় সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন কাজ করে যাচ্ছে, বলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।আমি নির্বাচন কমিশনকে আশ্বস্ত করেছি যে সশস্ত্র বাহিনীর তরফ থেকে যে ধরনের সাহায্য সহযোগিতা ওনারা চান আমরা সেটা দিব ইনশাআল্লাহ,বলে মি. জামান।

সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রপতির কাছে জানাবে।প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এবং সরকার-বিরোধী আরো বেশ কিছু রাজনৈতিক দল এবারের নির্বাচন বর্জন করছে।একতরফা নির্বাচনের প্রতিবাদের বিএনপি অবরোধ কর্মসূচিও পালন করছে।অবরোধ কর্মসূচির সময় দেশের বিভিন্ন জায়গায় গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।যদিও সরকার বারবারই দাবি করছে যে বিএনপির অবরোধের কোন প্রভাব নেই এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের পাশপাশি তাদের দলের কিছু স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক শরিক দলগুলো।এর বাইরে বেশ কিছু ছোট দলসহ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।কেন সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে সেটি পরিষ্কার করে কিছু বলেনি নির্বাচন কমিশন।

সোমবার বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনের সচিব মোঃ জাহাংগীর আলম সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন,সশস্ত্র বাহিনীর তরফ থেকে জানানো হয়েছে নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হলে কমিশন যেভাবে চাইবে সেনাবাহিনী সেভাবে কাজ করবে।তবে সেনাবাহিনীর কর্মপদ্ধতি নিয়ে কোন আলোচনা হয়নি বলে উল্লেখ করেন নির্বাচন কমিশনের সচিব।

ওয়ার্কিং প্ল্যান নিয়ে এখনো কোন আলোচনা হয়নি। যদি আমরা নিয়োজিত করি,মহামান্য রাষ্ট্রপতি যদি সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেন তার পরবর্তীতে এই বিষয়ে কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়ণ করা হবে,বলেন নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাংগীর আলম।

গত ৩০ বছরে বাংলাদেশে সবগুলো নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে দেখা গেছে। নির্বাচনে বিরোধী পক্ষ অংশগ্রহণ করুক কিংবা না করুক, প্রতিটি নির্বাচনে মাঠে নিয়োজত ছিল সেনাবাহিনী।

এর আগে ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি এবং ২০১৪ সালের পাঁচই জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের সময়ও নির্বাচন কমিশন মাঠে সেনা মোতায়েন করেছিল।

বাংলাদেশের নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা ‘রেওয়াজ’ নাকি ‘প্রয়োজন’?এমন প্রশ্নে সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন,এটা অনেক সময় প্রয়োজন হয়,অনেক সময় রেওয়াজ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে চায় নির্বাচন কমিশন।

নিউজ প্রকাশের সময় : ০৬:১০:০৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে চায় নির্বাচন কমিশন

 

বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে চায় নির্বাচন কমিশন।এজন্য সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন। সোমবার সেনাবাহিনীর তরফ থেকে জানানো হয়েছে,রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পেলে তারা কাজ শুরু করতে পারবে।সাধারণত নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয় নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য। অতীতে দেখা গেছে সেনাবাহিনী বেসামরিক প্রশাসনের সহযোগিতায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করেছে।

নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করার প্রয়োজন হচ্ছে কেন?এ প্রশ্ন তুলছেন পর্যবেক্ষকরা।এই নির্বাচনটাকে তো মানুষ গ্রহণ করতে পারছে না।এটার প্রস্তুতিটাই এমন যে সাধারণ মানুষ থেকে বড্ড বিচ্ছিন্নভাবে জিনিসটা ঘটছে।সেনাবাহিনী যা বলেছে নির্বাচন কমিশনের সাথে বৈঠকের পরে সেনাবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সোমবার সাংবাদিকদের বলেন,২৯শে ডিসেম্বর থেকে ১০ই জানুয়ারি সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে কথা হয়েছে। বিষয়টিকে ‘প্রারম্ভিক আলোচনা হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি।একটা সুন্দর আলোচনা হয়েছে। ওনাদের সাথে কথা বলে মনে হয়েছে যে ওনারা চাচ্ছেন যে একটা ফ্রি, ফেয়ার ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন যেন হয় সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন কাজ করে যাচ্ছে, বলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।আমি নির্বাচন কমিশনকে আশ্বস্ত করেছি যে সশস্ত্র বাহিনীর তরফ থেকে যে ধরনের সাহায্য সহযোগিতা ওনারা চান আমরা সেটা দিব ইনশাআল্লাহ,বলে মি. জামান।

সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রপতির কাছে জানাবে।প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এবং সরকার-বিরোধী আরো বেশ কিছু রাজনৈতিক দল এবারের নির্বাচন বর্জন করছে।একতরফা নির্বাচনের প্রতিবাদের বিএনপি অবরোধ কর্মসূচিও পালন করছে।অবরোধ কর্মসূচির সময় দেশের বিভিন্ন জায়গায় গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।যদিও সরকার বারবারই দাবি করছে যে বিএনপির অবরোধের কোন প্রভাব নেই এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের পাশপাশি তাদের দলের কিছু স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক শরিক দলগুলো।এর বাইরে বেশ কিছু ছোট দলসহ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।কেন সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে সেটি পরিষ্কার করে কিছু বলেনি নির্বাচন কমিশন।

সোমবার বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনের সচিব মোঃ জাহাংগীর আলম সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন,সশস্ত্র বাহিনীর তরফ থেকে জানানো হয়েছে নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হলে কমিশন যেভাবে চাইবে সেনাবাহিনী সেভাবে কাজ করবে।তবে সেনাবাহিনীর কর্মপদ্ধতি নিয়ে কোন আলোচনা হয়নি বলে উল্লেখ করেন নির্বাচন কমিশনের সচিব।

ওয়ার্কিং প্ল্যান নিয়ে এখনো কোন আলোচনা হয়নি। যদি আমরা নিয়োজিত করি,মহামান্য রাষ্ট্রপতি যদি সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেন তার পরবর্তীতে এই বিষয়ে কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়ণ করা হবে,বলেন নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাংগীর আলম।

গত ৩০ বছরে বাংলাদেশে সবগুলো নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে দেখা গেছে। নির্বাচনে বিরোধী পক্ষ অংশগ্রহণ করুক কিংবা না করুক, প্রতিটি নির্বাচনে মাঠে নিয়োজত ছিল সেনাবাহিনী।

এর আগে ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি এবং ২০১৪ সালের পাঁচই জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের সময়ও নির্বাচন কমিশন মাঠে সেনা মোতায়েন করেছিল।

বাংলাদেশের নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা ‘রেওয়াজ’ নাকি ‘প্রয়োজন’?এমন প্রশ্নে সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন,এটা অনেক সময় প্রয়োজন হয়,অনেক সময় রেওয়াজ।