ঢাকা ০৮:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পশ্চিম পদুয়ায় ঈদের নামাজ শেষে মুসল্লিরা ছুটছেন কবর জিয়ারতে ঈদ উল আযহা উপলক্ষে ধর্ম প্রাণ মুসলিমদের ঈদের শুভেচ্ছা। পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে কলাতলী মানব সেবা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গরীব অসহায় দুস্থ মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচী। ভোলার মনপুরায় নৌবাহিনী ও পুলিশের সমন্বয়ে দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক। ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা। ঈদে নৌপথের নিরাপত্তায় কোস্ট গার্ড। ঈদে নতুন জামা নয়, এক খণ্ড রুটি চায় গাজার শিশুর সাউথ কোরিয়ায় গঙ্গা ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স শেষ করার গল্পঃএ কে আজাদ বিশিষ্ট সমাজসেবক আলমগীর হোসেনের ঈদ শুভেচ্ছা পবিত্র ঈদুল আজহার উপলক্ষে, ১০ কেজি করে হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ভিজিএফ চাল বিতরণ করেন।

যশোর-নড়াইল সড়কে গলে যাচ্ছে বিটুমিন, তদন্তে দুদক

মো: মহিবুল ইসলাম খুলনা বিভাগীয় ব্যুরো চীফ
  • নিউজ প্রকাশের সময় : ০৮:২২:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪ ৫১ বার পড়া হয়েছে

দাবদাহে যশোরে পিচগলা সড়ক তদন্তে নেমেছে দুদক। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে যশোর-নড়াইল সড়কে বিভিন্ন পয়েন্টে গলা বিটুমিন পরীক্ষার পাশাপাশি সড়কের তাপমাত্রা দেখেন দুদকের কর্মকর্তারা।এ সময় উপস্থিত ছিলেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও।চলতি মৌসুমে যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুই সপ্তাহ আগে থেকেই গলতে শুরু করে এ আঞ্চলিক মহাসড়কের বিটুমিন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।পরিবহণ শ্রমিক-নেতাসহ সচেতন মহলের দাবি, দুর্নীতি করে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক নির্মাণ করায় বিটুমিন গলে যাচ্ছে। এতে যানবাহন চলাচলে সমস্যায় পড়ছেন চালকরা। বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নির্দেশে দুদক কর্মকর্তারা পরীক্ষার সময় সড়কের কাজ নিম্নমানের বলে মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে দ্রুততম সময়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দুদক যশোরের সহকারী পরিচালক চিরঞ্জন নিয়োগী, সহকারী পরিদর্শক সাফিউল্লাহসহ সড়ক বিভাগের দুজন সহকারী প্রকৌশলী।যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে দুদকের উপপরিচালক আল আমিন বলেন, বিভিন্ন পয়েন্টে সড়কের গলা পিচ পরীক্ষা করেছি। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত লিখে প্রধান কার্যালয়ে পাঠাব। তদন্তের স্বার্থে আমরা এর বেশি বলতে পারছি না।সড়ক বিভাগের তথ্যমতে, চার মাস আগে এ আঞ্চলিক মহাসড়কে পাথর কার্পেটিংয়ের কাজ করা হয়। যার প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৫ কোটি ৫৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।সরেজমিন যশোর-নড়াইল সড়কের যশোর অংশের ঝুমঝুমপুর এলাকাতে দেখা গেছে, সড়কের পিচ গলে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সড়কে যান চলাচলের সময় পিচ চাকায় লেগে যাচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও যানবাহনের চাকার দাগ বসে যাচ্ছে সড়কে। এ সড়কের প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকার অধিকাংশ জায়গার পিচ গলে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে দাবদাহে সড়কের পিচ গলে যাওয়াতে নির্মাণ সংশ্লিষ্টদের দায়ী করছেন স্থানীয়রা।দুদক ও সড়ক জনপথের কর্মকর্তাদের সামনে তারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।মুরাদ হোসেন নামে স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন, দুপুর গড়ানোর পর রাস্তার পিচ যেন কাদায় পরিণত হয়। রিকশার চাকা রাস্তায় আটকে যায়।আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে আরেক ব্যবসায়ী জানান, এত নিম্নমানের কাজ করেছে, ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পিচ গলে যাচ্ছে। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত করে ঠিকাদার ও কর্মকর্তাদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, তারা সাধারণত সড়কে যে পিচ ব্যবহার করেন তা ৬০-৭০ গ্রেডের। এর গলনাঙ্ক ৪৮ থেকে ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠলে এ পিচ গলার কথা। কিন্তু তার অনেক আগেই পিচ গলে যাচ্ছে।সওজ সংশ্লিষ্ট সূত্র পিচ গলার কারণ হিসাবে বলেছে, তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির নিচে থাকলেও বাতাসের আর্দ্রতার কারণে অনুভূতির পরিমাণ আরও কয়েক ডিগ্রি বেশি হয়। সড়কের পিচের ওপরে এ তাপমাত্রা আরও প্রায় ৫ ডিগ্রি বেশি থাকে। আর কালো হওয়ায় এ পিচ সূর্যের তাপও শোষণ করে বেশি। তবে এর বাইরে সড়কের কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া বলেন, গলে যাওয়া স্থানগুলোতে বালি ও নুড়িপাথর দেওয়া হচ্ছে, যাতে পিচ আগের অবস্থায় ফিরে আসে। সড়কে নিম্নমানের কোনো সামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, দুদক তদন্ত করছে। অনিয়ম হলে তদন্তে জানা যাবে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

যশোর-নড়াইল সড়কে গলে যাচ্ছে বিটুমিন, তদন্তে দুদক

নিউজ প্রকাশের সময় : ০৮:২২:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪

দাবদাহে যশোরে পিচগলা সড়ক তদন্তে নেমেছে দুদক। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে যশোর-নড়াইল সড়কে বিভিন্ন পয়েন্টে গলা বিটুমিন পরীক্ষার পাশাপাশি সড়কের তাপমাত্রা দেখেন দুদকের কর্মকর্তারা।এ সময় উপস্থিত ছিলেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও।চলতি মৌসুমে যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুই সপ্তাহ আগে থেকেই গলতে শুরু করে এ আঞ্চলিক মহাসড়কের বিটুমিন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।পরিবহণ শ্রমিক-নেতাসহ সচেতন মহলের দাবি, দুর্নীতি করে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক নির্মাণ করায় বিটুমিন গলে যাচ্ছে। এতে যানবাহন চলাচলে সমস্যায় পড়ছেন চালকরা। বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নির্দেশে দুদক কর্মকর্তারা পরীক্ষার সময় সড়কের কাজ নিম্নমানের বলে মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে দ্রুততম সময়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দুদক যশোরের সহকারী পরিচালক চিরঞ্জন নিয়োগী, সহকারী পরিদর্শক সাফিউল্লাহসহ সড়ক বিভাগের দুজন সহকারী প্রকৌশলী।যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে দুদকের উপপরিচালক আল আমিন বলেন, বিভিন্ন পয়েন্টে সড়কের গলা পিচ পরীক্ষা করেছি। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত লিখে প্রধান কার্যালয়ে পাঠাব। তদন্তের স্বার্থে আমরা এর বেশি বলতে পারছি না।সড়ক বিভাগের তথ্যমতে, চার মাস আগে এ আঞ্চলিক মহাসড়কে পাথর কার্পেটিংয়ের কাজ করা হয়। যার প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৫ কোটি ৫৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।সরেজমিন যশোর-নড়াইল সড়কের যশোর অংশের ঝুমঝুমপুর এলাকাতে দেখা গেছে, সড়কের পিচ গলে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সড়কে যান চলাচলের সময় পিচ চাকায় লেগে যাচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও যানবাহনের চাকার দাগ বসে যাচ্ছে সড়কে। এ সড়কের প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকার অধিকাংশ জায়গার পিচ গলে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে দাবদাহে সড়কের পিচ গলে যাওয়াতে নির্মাণ সংশ্লিষ্টদের দায়ী করছেন স্থানীয়রা।দুদক ও সড়ক জনপথের কর্মকর্তাদের সামনে তারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।মুরাদ হোসেন নামে স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন, দুপুর গড়ানোর পর রাস্তার পিচ যেন কাদায় পরিণত হয়। রিকশার চাকা রাস্তায় আটকে যায়।আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে আরেক ব্যবসায়ী জানান, এত নিম্নমানের কাজ করেছে, ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পিচ গলে যাচ্ছে। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত করে ঠিকাদার ও কর্মকর্তাদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, তারা সাধারণত সড়কে যে পিচ ব্যবহার করেন তা ৬০-৭০ গ্রেডের। এর গলনাঙ্ক ৪৮ থেকে ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠলে এ পিচ গলার কথা। কিন্তু তার অনেক আগেই পিচ গলে যাচ্ছে।সওজ সংশ্লিষ্ট সূত্র পিচ গলার কারণ হিসাবে বলেছে, তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির নিচে থাকলেও বাতাসের আর্দ্রতার কারণে অনুভূতির পরিমাণ আরও কয়েক ডিগ্রি বেশি হয়। সড়কের পিচের ওপরে এ তাপমাত্রা আরও প্রায় ৫ ডিগ্রি বেশি থাকে। আর কালো হওয়ায় এ পিচ সূর্যের তাপও শোষণ করে বেশি। তবে এর বাইরে সড়কের কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া বলেন, গলে যাওয়া স্থানগুলোতে বালি ও নুড়িপাথর দেওয়া হচ্ছে, যাতে পিচ আগের অবস্থায় ফিরে আসে। সড়কে নিম্নমানের কোনো সামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, দুদক তদন্ত করছে। অনিয়ম হলে তদন্তে জানা যাবে।