ঢাকা ০২:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পশ্চিম পদুয়ায় ঈদের নামাজ শেষে মুসল্লিরা ছুটছেন কবর জিয়ারতে ঈদ উল আযহা উপলক্ষে ধর্ম প্রাণ মুসলিমদের ঈদের শুভেচ্ছা। পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে কলাতলী মানব সেবা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গরীব অসহায় দুস্থ মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচী। ভোলার মনপুরায় নৌবাহিনী ও পুলিশের সমন্বয়ে দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক। ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা। ঈদে নৌপথের নিরাপত্তায় কোস্ট গার্ড। ঈদে নতুন জামা নয়, এক খণ্ড রুটি চায় গাজার শিশুর সাউথ কোরিয়ায় গঙ্গা ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স শেষ করার গল্পঃএ কে আজাদ বিশিষ্ট সমাজসেবক আলমগীর হোসেনের ঈদ শুভেচ্ছা পবিত্র ঈদুল আজহার উপলক্ষে, ১০ কেজি করে হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ভিজিএফ চাল বিতরণ করেন।

ডেঙ্গু প্রকোপের মাঝে ৭ চিকিৎসক ছুটিবিহীন প্রমোদ ভ্রমণ।

এম কে খোকন (ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি)
  • নিউজ প্রকাশের সময় : ০৯:৫১:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০৩ বার পড়া হয়েছে

ডেঙ্গু প্রকোপের মাঝে ৭ চিকিৎসক ছুটিবিহীন প্রমোদ ভ্রমণ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসকসহ সাতজন সরকারি চিকিৎসক হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা না দিয়ে এবং কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো ধরনের ছুটি বা অনুমোদন না নিয়ে প্রমোদ ভ্রমণে বান্দরবান গেছেন। এতে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে দূর-দূরান্ত থেকে আসা বিশেষত ডেঙ্গু রোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এ ঘটনায় ভ্রমণে থাকা চিকিৎসকদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনেরা। তবে হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা জানান, ছুটিতে থাকা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ফিরে এলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার অন্যতম প্রধান সরকারি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল। এ হাসপাতালটি জেলাবাসীর উন্নত চিকিৎসা সেবা নেওয়ার একমাত্র ভরসা স্থল। হাসপাতালটিতে জরুরি বিভাগসহ অন্তত ১৪টি বিভাগ রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে আড়াই থেকে ৩ হাজার রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন। কিন্তু আজ সকাল থেকে হাসপাতালটিতে তীব্র রোগীর চাপ থাকলেও হাসপাতালটির আবাসিক চিকিৎসকসহ ৭ জন চিকিৎসক উপস্থিত না থাকায় ভোগান্তিতে পরেন রোগীরা।

অনুপস্থিত থাকা চিকিৎসকরা হলেন, হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. ফায়েজুর রহমান, গাইনি চিকিৎসক ডা. শরিফ মাসুমা ইসমত, ডা. মারিয়া পারভীন, ডা. আইরিন হক, ডা. কামরুল নাহার বেগম, ডা. ফাহমিদা ও ডা. খোকন।
এদিকে রোগী ও তাদের স্বজনেরা হাসপাতালে এসে কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
শহরের মৌড়াইল এলাকা থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আব্দুস সাত্তার নামে এক রোগী বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালের ডাক্তাররা কোনো ধরনের ছুটি না নিয়েই ভ্রমণে যাবেন এটা ঠিক নয়। কারণ এখানে অনেক রোগী এসে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাড়িয়েও চিকিৎসা নিতে পারছেন না। তারা হাসপাতালের রোগীর সেবা না দিয়ে ঘুরতে যাবে এটা কখনই কাম্য নয়। আমরা তাদের বিচার দাবি করছি।
দীপক চৌধুরী বাপ্পী নামে আরেক রোগীর স্বজন বলেন, এ হাসপাতালে রোগীর চাপ থাকলেও ডাক্তাররা এমনিতেই রোগী কম দেখে। তার উপর এখন বেশ কয়েকজন ডাক্তার ছুটি না নিয়ে ঘুরতে চলে গেছেন। তাদের এ বিষয়টি আমাদের কাম্য নয়। আমরা চাই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।
এদিকে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রানা নূরুস শামস জানান, সরকাান প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ডেঙ্গু মৌসুমে কেউ ছুটি কাটাতে পারবেন না। তবে তারা বান্দারবান ছুটিতে গেলে নিজ দায়িত্বে গেছেন। তাদের কেউ ছুটি নিয়ে যায়নি। তত্বাবধায়ক আসার পর তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান এ চিকিৎসক কর্মকর্তা।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্বাবধায়কের দায়িত্বে থাকা অপর আবাসিক চিকিৎসক ডা. সুমন ভূইঞাঁ জানান, ‘গাইনি বিভাগসহ ৭ জন চিকিৎসক অনুপস্থিত রয়েছেন। এতে চিকিৎসা ব্যবস্থা কিছুটা ব্যহত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে ভিন্ন ভাবে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
এদিকে ভ্রমণে থাকা আবাসিক চিকিৎসক ডা. ফাজুর রহমান ফয়েজ জানান, তিনি ছুটি নিয়ে পরিবাবের সঙ্গে অবকাশ যাপনে আছেন। অন্য চিকিৎসকেরাও ছুটির আবেদন জমা দিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

ডেঙ্গু প্রকোপের মাঝে ৭ চিকিৎসক ছুটিবিহীন প্রমোদ ভ্রমণ।

নিউজ প্রকাশের সময় : ০৯:৫১:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ডেঙ্গু প্রকোপের মাঝে ৭ চিকিৎসক ছুটিবিহীন প্রমোদ ভ্রমণ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসকসহ সাতজন সরকারি চিকিৎসক হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা না দিয়ে এবং কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো ধরনের ছুটি বা অনুমোদন না নিয়ে প্রমোদ ভ্রমণে বান্দরবান গেছেন। এতে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে দূর-দূরান্ত থেকে আসা বিশেষত ডেঙ্গু রোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এ ঘটনায় ভ্রমণে থাকা চিকিৎসকদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনেরা। তবে হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা জানান, ছুটিতে থাকা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ফিরে এলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার অন্যতম প্রধান সরকারি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল। এ হাসপাতালটি জেলাবাসীর উন্নত চিকিৎসা সেবা নেওয়ার একমাত্র ভরসা স্থল। হাসপাতালটিতে জরুরি বিভাগসহ অন্তত ১৪টি বিভাগ রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে আড়াই থেকে ৩ হাজার রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন। কিন্তু আজ সকাল থেকে হাসপাতালটিতে তীব্র রোগীর চাপ থাকলেও হাসপাতালটির আবাসিক চিকিৎসকসহ ৭ জন চিকিৎসক উপস্থিত না থাকায় ভোগান্তিতে পরেন রোগীরা।

অনুপস্থিত থাকা চিকিৎসকরা হলেন, হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. ফায়েজুর রহমান, গাইনি চিকিৎসক ডা. শরিফ মাসুমা ইসমত, ডা. মারিয়া পারভীন, ডা. আইরিন হক, ডা. কামরুল নাহার বেগম, ডা. ফাহমিদা ও ডা. খোকন।
এদিকে রোগী ও তাদের স্বজনেরা হাসপাতালে এসে কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
শহরের মৌড়াইল এলাকা থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আব্দুস সাত্তার নামে এক রোগী বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালের ডাক্তাররা কোনো ধরনের ছুটি না নিয়েই ভ্রমণে যাবেন এটা ঠিক নয়। কারণ এখানে অনেক রোগী এসে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাড়িয়েও চিকিৎসা নিতে পারছেন না। তারা হাসপাতালের রোগীর সেবা না দিয়ে ঘুরতে যাবে এটা কখনই কাম্য নয়। আমরা তাদের বিচার দাবি করছি।
দীপক চৌধুরী বাপ্পী নামে আরেক রোগীর স্বজন বলেন, এ হাসপাতালে রোগীর চাপ থাকলেও ডাক্তাররা এমনিতেই রোগী কম দেখে। তার উপর এখন বেশ কয়েকজন ডাক্তার ছুটি না নিয়ে ঘুরতে চলে গেছেন। তাদের এ বিষয়টি আমাদের কাম্য নয়। আমরা চাই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।
এদিকে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রানা নূরুস শামস জানান, সরকাান প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ডেঙ্গু মৌসুমে কেউ ছুটি কাটাতে পারবেন না। তবে তারা বান্দারবান ছুটিতে গেলে নিজ দায়িত্বে গেছেন। তাদের কেউ ছুটি নিয়ে যায়নি। তত্বাবধায়ক আসার পর তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান এ চিকিৎসক কর্মকর্তা।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্বাবধায়কের দায়িত্বে থাকা অপর আবাসিক চিকিৎসক ডা. সুমন ভূইঞাঁ জানান, ‘গাইনি বিভাগসহ ৭ জন চিকিৎসক অনুপস্থিত রয়েছেন। এতে চিকিৎসা ব্যবস্থা কিছুটা ব্যহত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে ভিন্ন ভাবে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
এদিকে ভ্রমণে থাকা আবাসিক চিকিৎসক ডা. ফাজুর রহমান ফয়েজ জানান, তিনি ছুটি নিয়ে পরিবাবের সঙ্গে অবকাশ যাপনে আছেন। অন্য চিকিৎসকেরাও ছুটির আবেদন জমা দিয়েছেন।