ঢাকা ০৭:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
অত্যাধুনিক ডিভাইস কসমেটিক মুসলমানী (খাৎনা) মাদক কারবারিতে বাধা দেওয়ায় ছেলের হাতে বাবা খুন বরুড়ায় জিয়া প্রবাসী ফোরামের উদ্যোগে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ৪৪তম সাহাদাৎ বার্ষিকী পালিত উলানিয়া বন্দর আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলা অনুষ্ঠিত ম্যাচ ২০২৫। নাগরপুরে রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তদের আগুন নাগরপুরে রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তদের আগুন কালীগঞ্জের রতনপুর গুড়ুইমহলে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে সেবা পেল দুই শতাধিক প্রান্তিক মানুষ মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিম হাজী আমজাদ আলী উচ্চ বিদ্যালয় এলামনাই অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন। এক ইলিশ সাড়ে ৯ হাজার টাকায় বিক্র চাঁদপুরে মরিয়ম ফুলের উপকারিতা

সব শেষ হয়ে যাবে বাঁধ ভাঙলে কিছুই থাকবে না 

রিপোর্টার রফিকুল ইসলাম 
  • নিউজ প্রকাশের সময় : ০৭:৩২:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০২৪ ৫৫৭ বার পড়া হয়েছে

দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটছে উপকূলের মানুষের  ঢাকা পোস্টআইলা, সিডর, আম্ফান, ইয়াসসহ অসংখ্য ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষত-বিক্ষত খুলনার উপকূল। এসব ঘূর্ণিঝড়ে বাঁধ ভেঙে শেষ হয়েছে উপকূলের মানুষের স্বপ্ন। ভাঙা আর গড়া নিত্যসঙ্গী হয়ে পড়েছে এখানকার মানুষের জীবনে। বছর ঘুরতেই মাথায় চেপে বসে দুশ্চিন্তা। কখন যেন ঝড় সব লন্ডভন্ড করে দেয়। সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তার কারণ হয় উপকূলের দুর্বল বেড়িবাঁধ। আর সেই দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটছে উপকূলের মানুষের।রোববার (২৬ মে) রাত সাড়ে ১০টা থেকে খুলনায় শুরু হয়েছে ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডব। আর এতেই উপকূলের মানুষের কপালে চিন্তার ভাজ এঁটে দিয়েছে বেড়িবাঁধ।বটিয়াঘাটার গঙ্গারামপুর ইউনিয়নের বরণপাড়া এলাকার বাসিন্দা রমেশ চক্রবর্তী বলেন, তিন বছর আগে ঝড়ে আমার চারটি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছিল গোটা গ্রাম। মাঠ থেকে তুলে আনা নতুন ধান ও গোলা সব শেষ হয়ে গিয়েছিল। নতুন করে পাশেই ঘর তুলেছি। আজ নদীতে জল বেশি। ভাটির সময়ই জল রাস্তা ছুঁই ছুঁই। জোয়ার আসলে ঝড়ের প্রভাবে রাতে বাঁধ ভাঙলে কিছুই থাকবে না। সব শেষ হয়ে যাবে।ঘূর্ণিঝড় রেমাল : বিদ্যুৎহীন ২৬ লাখ গ্রাহক এই রাতের মধ্যে কী হবে আল্লাহ জানে!শক্তি দেখাচ্ছে রেমাল, পটুয়াখালীতে সর্বোচ্চ ১০২ কি.মি. বেগে আঘাতবটিয়াঘাটা উপজেলার জলমা এলাকার বাসিন্দা খোকন মল্লিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, নদীতে পানি বাড়ছে। ঝড়ের প্রভাবে জোয়ারে নদীর পানি আরও বাড়বে। বাঁধ ভেঙে গেলে সব তলিয়ে যাবে। ঘর-বাড়ি ভেঙে যাবে সেই দুশ্চিন্তায় আছি। এই অবস্থায় আমার ঘর ফেলে পরিবার নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছি।উপজেলার বরণপাড়া এলাকার বাসিন্দা বিকাশ চন্দ্র ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের রাস্তা বাঁধের উপর। ঘূর্ণিঝড় যদি প্রবল হয়, তাহলে রাস্তা ভেঙে পানিতে তলিয়ে যাবে ঘর-বাড়ি। এই নিয়ে ভয়াবহ আতঙ্কে আছি। রাস্তা-ঘাট ভেঙে গেলে আমরা বিপদগ্রস্ত হয়ে যাব।ওই গ্রামের হোটেল দোকানি মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, বাঁধ নিয়ে মানুষ দুশ্চিন্তায় রয়েছে। বেড়িবাঁধ ভাঙলে বিপদের শেষ থাকবে না। সব তলিয়ে যাবে।পাইকগাছা শান্তা এলাকার বাসিন্দা সাফায়েত হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে নদীতে রাতে জোয়ারের পানি বাড়তে শুরু করেছে। তবে দিনের থেকেও রাতে পানির তীব্রতা অনেক বেশি। এতে নড়বড়ে বেড়িবাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।কয়রা উপজেলার বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম বলেন, রাত দেড়টার দিকে ঝড়ের গতি কমে গেছে। তবে জোয়ারের পানি বাড়লে বাঁধ নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। একই উপজেলার কামাল মোস্তফা বলেন, এই অঞ্চলের মানুষের দুশ্চিন্তার একটি মাত্র কারণ দুর্বল বেড়িবাঁধ।খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল রাত সাড়ে ১০টায় খুলনাসহ উপকূলে আঘাত হানতে শুরু করে। এখনো তাণ্ডব চলছে। কয়রা উপকূলে ১০০ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগ রয়েছে। আর খুলনার অন্যান্য স্থানে ঘণ্টায় ৬৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইছে। সঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে। আরও ২-৩ ঘণ্টা এভাবে চলবে।তিনি বলেন, জোয়ারের সময়ে ৮ থেকে ১০ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

সব শেষ হয়ে যাবে বাঁধ ভাঙলে কিছুই থাকবে না 

নিউজ প্রকাশের সময় : ০৭:৩২:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০২৪

দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটছে উপকূলের মানুষের  ঢাকা পোস্টআইলা, সিডর, আম্ফান, ইয়াসসহ অসংখ্য ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষত-বিক্ষত খুলনার উপকূল। এসব ঘূর্ণিঝড়ে বাঁধ ভেঙে শেষ হয়েছে উপকূলের মানুষের স্বপ্ন। ভাঙা আর গড়া নিত্যসঙ্গী হয়ে পড়েছে এখানকার মানুষের জীবনে। বছর ঘুরতেই মাথায় চেপে বসে দুশ্চিন্তা। কখন যেন ঝড় সব লন্ডভন্ড করে দেয়। সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তার কারণ হয় উপকূলের দুর্বল বেড়িবাঁধ। আর সেই দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটছে উপকূলের মানুষের।রোববার (২৬ মে) রাত সাড়ে ১০টা থেকে খুলনায় শুরু হয়েছে ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডব। আর এতেই উপকূলের মানুষের কপালে চিন্তার ভাজ এঁটে দিয়েছে বেড়িবাঁধ।বটিয়াঘাটার গঙ্গারামপুর ইউনিয়নের বরণপাড়া এলাকার বাসিন্দা রমেশ চক্রবর্তী বলেন, তিন বছর আগে ঝড়ে আমার চারটি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছিল গোটা গ্রাম। মাঠ থেকে তুলে আনা নতুন ধান ও গোলা সব শেষ হয়ে গিয়েছিল। নতুন করে পাশেই ঘর তুলেছি। আজ নদীতে জল বেশি। ভাটির সময়ই জল রাস্তা ছুঁই ছুঁই। জোয়ার আসলে ঝড়ের প্রভাবে রাতে বাঁধ ভাঙলে কিছুই থাকবে না। সব শেষ হয়ে যাবে।ঘূর্ণিঝড় রেমাল : বিদ্যুৎহীন ২৬ লাখ গ্রাহক এই রাতের মধ্যে কী হবে আল্লাহ জানে!শক্তি দেখাচ্ছে রেমাল, পটুয়াখালীতে সর্বোচ্চ ১০২ কি.মি. বেগে আঘাতবটিয়াঘাটা উপজেলার জলমা এলাকার বাসিন্দা খোকন মল্লিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, নদীতে পানি বাড়ছে। ঝড়ের প্রভাবে জোয়ারে নদীর পানি আরও বাড়বে। বাঁধ ভেঙে গেলে সব তলিয়ে যাবে। ঘর-বাড়ি ভেঙে যাবে সেই দুশ্চিন্তায় আছি। এই অবস্থায় আমার ঘর ফেলে পরিবার নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছি।উপজেলার বরণপাড়া এলাকার বাসিন্দা বিকাশ চন্দ্র ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের রাস্তা বাঁধের উপর। ঘূর্ণিঝড় যদি প্রবল হয়, তাহলে রাস্তা ভেঙে পানিতে তলিয়ে যাবে ঘর-বাড়ি। এই নিয়ে ভয়াবহ আতঙ্কে আছি। রাস্তা-ঘাট ভেঙে গেলে আমরা বিপদগ্রস্ত হয়ে যাব।ওই গ্রামের হোটেল দোকানি মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, বাঁধ নিয়ে মানুষ দুশ্চিন্তায় রয়েছে। বেড়িবাঁধ ভাঙলে বিপদের শেষ থাকবে না। সব তলিয়ে যাবে।পাইকগাছা শান্তা এলাকার বাসিন্দা সাফায়েত হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে নদীতে রাতে জোয়ারের পানি বাড়তে শুরু করেছে। তবে দিনের থেকেও রাতে পানির তীব্রতা অনেক বেশি। এতে নড়বড়ে বেড়িবাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।কয়রা উপজেলার বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম বলেন, রাত দেড়টার দিকে ঝড়ের গতি কমে গেছে। তবে জোয়ারের পানি বাড়লে বাঁধ নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। একই উপজেলার কামাল মোস্তফা বলেন, এই অঞ্চলের মানুষের দুশ্চিন্তার একটি মাত্র কারণ দুর্বল বেড়িবাঁধ।খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল রাত সাড়ে ১০টায় খুলনাসহ উপকূলে আঘাত হানতে শুরু করে। এখনো তাণ্ডব চলছে। কয়রা উপকূলে ১০০ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগ রয়েছে। আর খুলনার অন্যান্য স্থানে ঘণ্টায় ৬৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইছে। সঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে। আরও ২-৩ ঘণ্টা এভাবে চলবে।তিনি বলেন, জোয়ারের সময়ে ৮ থেকে ১০ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।